অবসর নিয়ে হয়ত আমেরিকার কোচ হয়েও আসতে পারি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : সাকিব আল হাসান বলেছেন, বিশ্বকাপ জিতে যেতে চাই। হোম সিরিজে বিশ্বের যে কোনো দলের সঙ্গে জেতার সামর্থ আমাদের রয়েছে। আশা করি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও জিততে পারব। শো টাইম মিউজিক এন্ড প্লে আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় বিশ্বের সেরা অল রাউন্ডার, বাংলাদেশের গর্ব সাকিব আল হাসান এ কথা বলেন।
নিউইয়র্ক থেকে এনা জানায়, নিউইয়র্কের উডসাইডে কুইন্স প্যালেসে গত ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাকিব আল হাসান। আনিসুর রহমান দিপুর উপস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সভাপতি এম আজিজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসের জনপ্রিয় পত্রিকা ঠিকানার প্রেসিডেন্ট/সিওও এবং সাবেক জাতীয় খেলোয়াড় সাঈদ-উর-রব, শো টাইম মিউজিকের প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি, ব্যবসায়ী সৈয়দ রহমান মান্নান, বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রিজিয়া পারভীন, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবীব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন, পরাণ চৌধুরী, খায়রুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আসাদুল ইসলাম আসাদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের শুভচ্ছা বক্তব্যের পরই শুরু হয় নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের প্রশ্ন উত্তর পর্ব। অনেক নাটকের পর অস্ট্রেলিয়া টিমের বাংলাদেশ সফর নিয়ে এনার এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, হোমে যে কোনো দলের সঙ্গে আমাদের জেতার সামর্থ রয়েছে। আশা করছি আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও জিততে পারব। আমরা নিজের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও জয়লাভ করেছি। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে আসছে আমরা খুবই এক্সসাইটেড। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেকরা আমাদের সিঁড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, আমরা আরেকটি পর্যায়ে নিয়ে গেছি এবং আগামী প্রজন্ম আরও আগে নিয়ে যাবে, বড় বড় সাফল্য আনবে। ২০০৩ সাল থেকে আমাদের ক্রিকেট উন্নতির দিকেই যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট সঠিক পথেই এগুচ্ছে। আমরা রাইট ট্র্যাকে রয়েছি। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কোথায় রেখে যেতে চান ঠিকানার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যতদিন সম্ভব আমি ক্রিকেট খেলব, দেশের সেবা করব। আশা করছি আরও ১০ বছর জাতীয় দলে খেলতো পারব। আর আমার টার্গেট- বিশ্বকাপ জিততে চাই। বলিউড বাদশাহ এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খানকে নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শাহরুখ খান ফ্রেন্ডলি মানুষ। আমার সঙ্গে খুবই ক্লোজ। সব সময় তিনি আমার এবং আমার পরিবারের খোঁজ খবর নেন। উনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। যেমন সন্তানের ভালো বাবা হওয়া এবং ভালো স্বামী হওয়া। তাছাড়া তিনি বাংলাদেশ দলের প্রায় সব খেলাই দেখেন।
স্ত্রী শিশিরের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফেসবুকে। প্রথমে মনে করেছিলাম ফেইক আইডি। তারপরে এড করার পর দেখলাম ফেইক না রিয়েল। আমাদের প্রথম দেখা হয় লন্ডনে। আমি ইংলিশ কাউন্ট্রি খেলতে গিয়েছিলাম। আমেরিকা থেকে সেও গিয়েছিল। সে এবং আমার কন্যা এখন আমেরিকায় রয়েছে। দ্বিতীয়বার দেখা হয়। সেই সম্পর্কে আমি এখনো কিছু বলিনি, বলতেও চাই না। বই লিখলে কোনো দিন ঘটনা লিখব। আর তৃতীয় দেখা ঢাকাতে। বলতে পারেন বিয়ে। আমি খুব তাড়াহুড়া করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখন বলতে পারি বিয়েটাই হলো আমার লাইফের ভালো গিফট। আমার ক্রিকেটে ওর এবং আমার বন্ধুদের অবদান রয়েছে। তবে ওরটা বেশি। দুঃখ এবং খুশি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুঃখ হলো ২০১২ সালে এশিয়া কাপে ২ রানে পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়া এবং বিশ্বকাপে ভারতের কাছে ২ বার হেরে যাওয়া। সত্যি কথা বলতে কি, আমি সবচেয়ে সুখি। এ জন্য আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন ছিল আমার সন্তানের জন্মের দিন। আমেরিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ছেলেমেয়ের ক্রিকেট খেলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জানি এখানে আমাদের অনেক সাবেক খেলোয়াড়রা এসে খেলেন। যারা এখানে ক্রিকেট খেলছে তাদের তিনি ধন্যবাদ জানান। এবং বলেন, আমেরিকা যত তাড়াতাড়ি ক্রিকেটে ভালো করবে, ক্রিকেট বিশ্বেরও উন্নতি হবে।
হাসতে হাসতে বলেন, বলা তো যায় না অবসর নিয়ে হয়ত আমেরিকার কোচ হয়েও আসতে পারি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার অবদান নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবার অবদান আছে। তাদের অবদান ছিল বলেই আমরা টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছি। আমার মতে শ্রীলংকার অবদান বেশি, ভারতেরও অবদান রয়েছে আর্থিক দিক থেকে আর পাকিস্তানতো নিজেরাই সমস্যায় রয়েছে। সেখানে দীর্ঘ দিন থেকে ম্যাচ হচ্ছে না।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে কয়েকজনের হাতে সাবিক আল হাসান ক্রেস্ট তুলে দেন এবং সবার সঙ্গেই ফটো সেশন করেন।