মুজিব মানে দীপ্ত এক বাংলাদেশ
রবিউল আলম
প্রতিটি মানুষের মনে একটি ভাবনা থাকে দেশ, সমাজ ও নিজস্ব চিন্তা চেতনা বাস্তবায়নে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য একটি স্থানের প্রয়োজন হয়। ঘর-বাড়ি, জমি-জমা পরিষ্কারভাবে বলতে হয় কর্মময় জীবন ও তার জন্য স্বাধীনতার প্রয়োজন। স্বাধীনতা যেমন নিজের জন্য, মতবাদ প্রকাশের জন্য, স্বাধীনতার প্রয়োজন হয়েছিল দেশ ও জাতির জন্য, যে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি এখন গর্ব করে বলতে পারে, মুজিব মানে দীপ্ত এক বাংলাদেশ। ফিলিস্তিন ও কাশ্মীরের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে অনেক ইতিহাস আছে, কিন্তু তারা কোনো শেখ মুজিবুর পায়নি। বাঙালি জাতি অনেক ভাগ্যবান, আমাদের একজন জাতির জনক আছে। মুক্ত আকাশে, মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারি। মনের ইচ্ছায় ইতিহাস বিকৃত করে যখন ইচ্ছা যাকে তাকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দিতে পারি। জন্ম হোক আর নাই হোক জন্মদিন পালন করতে পারি। এজন্য জন্মের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় না! স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে জনসমর্থনের প্রয়োজন নেই, জনপ্রতিনিধি হওয়ারও প্রয়োজন নেই! ড্রামের উপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিয়েই দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল বলে প্রচারিত হচ্ছে, কী বলবেন এ ধরনের কর্মকা-কে?
কাশ্মীরের মেহবুবা মুফতি বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি সেরা হলেও ইন্ডিয়া মানেই ইন্দিরা, শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিজেপি সরকারের সঙ্গে থেকেও একটি চির সত্য কথা বলতে কোনো কার্পণ্য করেননি। রাজনীতির কথা বলতে বুকের পাটা লাগে। সত্যকে স্বীকার করতে না পারলে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হবেন কিভাবে? মহাত্মা গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধী, মোদির অতীত কর্ম ছাড়া ভবিষ্যৎ হয় না। মেহবুবা আঙ্গুল দিয়ে সেই কথাটিই বোঝাতে চেয়েছেন। আমাদের মাঝে সেই রাজনীতিবিদ কবে হবে, যারা যে রাজনীতির দল করুক না কেন স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জাতির কাছে তুলে ধরবে। বলতে কোনো দ্বিধা করবে না, তোমার স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার নেই, তুমি শুধুমাত্র ঘোষণা পাঠ করেছ। তোমার জন্মদিন আজ নয়, আর হলেও আজ তা পালন করো না।
আজ জাতির জনকের শাহাদাৎবার্ষিকী, যার জন্য তুমি এদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলে, সেই ইতিহাসের মহানায়ক তোমাকে সমাজের সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, সামাজিক অবস্থানে এনে দিয়েছিল, স্বামীর অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিল, তুমি জন্মদিন পালন করলে আমরা সমাজে উঁচু গলায় কথা বলতে পারি না।
গত বৎসরে খালেদা জিয়ার শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছিল। জানি না লন্ডনে বসে এবার কি করে, কিন্তু দেশে কিছু রিজভী আছে। কিছু বুঝুক আর না বুঝুক, কিছু মনে থাকুক আর না থাকুক, মাইকের সামনে একটি লিখিত কাগজ নিয়ে মিডিয়াকে কিছু বলতে হবে, অন্যের লেখা বলছেন। একদিনও দেখলাম না রিজভী সাহেব নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু বলেছেন। নিজের মন থেকে কিছইু বলতে পারেন না, তারপরেও এরা জাতীয় নেতা দাবি করেন, জাতিকে দিক-নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসব নেতা দ্বারা জাতির কি উন্নতি ও জ্ঞান অর্জন হবে জানি না। দলের কর্মীদের তারা মনে রাখবেন কিভাবে? বাংলাদেশে রাজনীতি করবেন, সেই বাংলার জাতির জনকের নামটিও মনে রাখতে পারেন না। এটা কী করে হতে পারে? কী করে এদেশের জনগণের সমর্থন পাবে?
লেখক: ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা: আশিক রহমান