হজ্জের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ
আবু তালহা তারীফ
কাবা শরীফ: পবিত্র কাবা শরীফ পৃথিবীর প্রথম ইবাদত গৃহ। মুসলমানগন তার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করে। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য এখানে এসে হজ্জ করা ফরজ। পবিত্র কাবা ঘরের উচ্চতা ১৫ মিটার এর দৈর্ঘ্য ১২ মিটার এবং এর প্রস্থ ১০মিটার। একটি সমতল ক্ষেত্রের মাঝখানে অবস্থিত এ ঘরের চারদিকে রয়েছে মসজিদুল হারাম।
ই ঘর খুব সাদামাটা ও জাকজমকহীন হওয়া সত্বেও এই ঘর দেখতে খুবই আকর্শনীয়। কাবা ঘরের সাদা মাটা সৌন্দর্য ও অনাড়ম্বর তাই একে দিয়েছে অনন্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব। হজ্জের সময় এর চার পাশে তাওয়াফ করা ফরজ।
আরাফা: দু মাইল দৈর্ঘ্য ও দু মাইল প্রস্থ তিন দিকে পাহাড়বেষ্টিত সমতল একটি বিরাট ময়দানের নাম আরাফার ময়দান। মক্কার মোয়াল্লা থেকে আরাফার মক্কা সংলগ্ন পশ্চিম সীমান্তের দূরত্ব হচ্ছে ২১.৫কি.মি.। আরাফা হেরেমের সীমানার বাইরে অবস্থিত। যিলহজ্জের নয় তারিখে এ ময়দানে এক মুহূর্তের জন্য হলেও অবস্থান করা ফরজ।
মুযদালিফা: মুযদালিফা হলো মিনা ও আরাফার মধ্যে অবস্থিত একটি জায়গার নাম। মুযদালিফার পূর্ন জায়গাটিই মাশয়ারে হারাম। আরাফাে থেকে ফেরার পথে মুযদালিফায় রাত্রি যাপন করা ওয়াজীব।
হাজরে আসওয়াদ: হাজরে আসওয়াদ হলো একটি বেহেশতি পাথর। যা প্রথমে খুব সাদা বর্নের ছিল। বনী আদমের পাপ মুছতে মুছতে এটা কালো রং ধারন করেছে। হজরত আদম (আ:) যখন বেহেশতে থেকে পৃথিবীতে আসেন,তখন এ পাথরটিকে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে সাথে নিয়ে আসেন এবং কাবা তৈরির সময় সেটি কাবার পূর্বকোনে স্থাপন করেন। নূহ (আ:) এর প�াবনের সময় কাবা ঘরকে আকাশে উঠিয়ে নেয়ার প্রক্কালে আল্লাহ তায়ালা উক্ত পাথরটিকে আবু কুবায়স পাহাড়ে স্থাপন করেন। হজরত নুহ (আ:) এরা প্লাবনের সময় কাবা ঘরকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়ার প্রক্কালে আল্লাহ তায়ালা উক্ত পাথরটিকে আবু কুবায়স পাহাড়ে আমানত রাখেন।
যখন ঈব্রাহীম আ: কাবা ঘর পূর্ন নির্মান করেন,তখন জিবআঈল আ: আবু কুবায়স পাহাড় থেকে ওটা নিয়ে আসেন এবং ইব্রাহীম (আ:) তা কাবার পূর্বকোণে স্থাপন করেন। হজ্জের সময় তাওয়াফ করতে গিয়ে এ পাথরে চুমো দেওয়া সুন্নত। এ পাথর চুমো দেওয়ার মাধ্যমে গুনাহ মাপ হয়।
মাকামে ঈব্রাহীম: মাকামে ইব্রাহিম কাবাগৃহের একটি নিদর্শন। মাকামেইব্রাহীম একটি পাথরের নাম।এর উপরে দাড়িয়ে হজরত ইব্রাহীম (আ:) কাবাগৃহ নির্মন করেছেন। বর্নিত আছে নির্মানের সময় উচ্চতার সাথে সাথে পাথরটি আপনা আপনি উচু হয়ে যেত এবং নিচু অবতরনের সময় নিচু হয়ে যেত। এ পাথরের গায়ে হজরত ইব্রাহীম (আ:) এর পদচিহ্ন আছে।
যমযম: যমযম একটি স্বচ্ছ পানির ঝরনা। যা হজরত হাজেরা ও শিশু ইসমাঈল (আ:) এর পানি পানের জন্য জিব্রাইল (আ:) এর ডানার আঘাতে সৃষ্ট এ কূপ আল্লাহর এক জাজ্বল্যমান কুদরতের নিদর্শন। যুগযুগ ধরে এ পানি পান করেছে কিন্তু এই পানি শেষ হচ্ছেনা। তাওয়াফ করার পর এই পানি পান করা মুস্তাহাব। এ পানি সেফা স্বরুপ। প্রাচীন কালে এ পানি বালতি দিয়ে তুলে পান করতেহত। বর্তমানে অধুনা মোটর পাম্প দিয়ে হাউজে তুলে সেখান দিয়ে টেপের মাধ্যমে এ পানি সাপ্লাই করা হয়।সূত্র : তানবীরুল কোরআন শিক্ষার্থী, সরকারী মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা