রোহিঙ্গা ইস্যুতে ডিপ্লোমেটিক সলিউশন জরুরি
ব্যারিস্টার আফতাব উদ্দিন আহমদ : মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের উপর এই রকম অমানবিক আচরণ বেআইনি ও অমানবিক। বেআইনি বললাম এই কারণে, একটা রাষ্ট্রে যখন বছরের পর বছর থাকেন, তখন তো একটা অধিকার হয়ে যায়। আর রোহিঙ্গারা তো কয়েক পুরুষ ধরে ওখানে বাস করছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশন রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, তাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত। এদেরকে থাকতে দিতে হবে, নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে এবং তাদের উপর কোনো প্রকার অত্যাচার করা যাবে না। এই কারণে মিয়ানমার আন্তর্জাতিকভাবে একটা বেকায়দায় পড়ে গেছে। ফলে তারা ডেসপারেট হয়ে গেছে। তারা মনে করছে যে, ইন্টারন্যাশনাল কমিশন এই রকম রিপোর্ট দিয়েছে, এখন তো তাদের কাজটা অন্যায় বোঝাই যাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ বা কিছু কিছু মুসলিম দেশ বলে তা না। ইউএন কমিশন যখন বলছে, তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হোক তখন তারা দিশেহারা হয়ে গেছে।
মিয়ানমার যা করছে এটা অন্যায়। এই কারণে তাদের মাথা ঠিক নেই। তারা বেসামাল আচরণ করছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের পক্ষে তো তা একা করাটা সম্ভব না। বাংলাদেশ প্রথম যেভাবে শক্ত ঠেকায় ছিল, এখন কিন্তু নরম হয়েছে। এই কারণে ঢুকতে পারছে। এজন্য ইউনাইটেড ন্যাশন হাইকমিশন ফর রিফিউজিস এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম কাজ করছে। বাংলাদেশের করা উচিত আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে করা। জাতিসংঘের কফি আনার কমিশন তো আমাদের পক্ষে আছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই বিষয়টি তুলতে পারে। ওআইসি এবং মুসলিম দেশগুলোর অন্যান্য যে সংগঠন আছে, সব সংগঠনকে তারা ইনফর্ম করতে পারে। দেখেন আমার দেশে এই রকম হচ্ছে, বার্মা তো অন্যায় করছে, আমরা একা সামাল দিতে পারছি না। একা সামাল দেওয়া সম্ভবও না। ওদের তো উপায় নেই, ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, মানুষ মেরে ফেলছে।
আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের আরো মানবিক হওয়া উচিত। তবে একটা জিনিস গুরুত্বপূর্ণ, যারা ঢুকছে তাদের নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলতে হবে। যাতে করে ট্র্যাক করা যায়। অনেকে আবার ভেতর ঢুকে ভোটার আইডি বানিয়ে, পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন ক্রাইমে জড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিতে পারে, বাংলাদেশ প্রথমত ইউনাইটেড ন্যাশনের সাহায্য চেতে পারে। যেহেতু ইউনাইটেড ন্যাশন কমিশনটা করে দিয়েছে। দুভাবে, একটা হলো ইমেডিয়েট রেসপন্স। যেমন ফুড এন্ড সেলটার। এটা হলো ইমেডিয়েট। আর দীর্ঘমেয়াদী হচ্ছে সাধারণ পরিষদে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা। তাদের উপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা দরকার । মিয়ানমারে নোবেল প্রাইজ পাওয়া নেত্রী কোনো কথা বলছে না। সে কোনোভাবে এটা মেনে নিচ্ছে না যে, এই লোকগুলো তার দেশের নাগরিক। আমাদের মিলিটরি সলিউশনে না গিয়ে ডিপলোমেটিক সলিউশনে যাওয়া উচিত।
পরিচিতি: মহাসচিব, জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি
মতামত গ্রহণ: সাইফুল ইসলাম
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল াদুদ