আর্ন্তজাতিক বিশ্বের মতামতও রোহিঙ্গাদের পাশে আছে
খালেকুজ্জামান
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের কুটনৈতিক কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকারের দূর্বলতা প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। সেটা উত্তরণের জন্য সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এটা আমাদের দেখতে হবে। তবে আমরা মনে করি, আগে থেকেই সতর্ক থাকা ও কার্যকর কুটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার ছিল। রোহিঙ্গা সমস্যাটা বহু দিনের পুরনো সমস্যা। এ রকম একটা পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে, এ বিষয় সর্ম্পকেও পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার। আমাদের গোয়েন্দা, আমাদের সীমান্ত রক্ষী কিংবা এ্যাম্বাসীগুলোর মাধ্যমে কোনো ভাবেই সেখান থেকে আমরা যে আগাম তথ্য পেলাম না, প্রতিবেশী প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোকে পক্ষে আনতে পারলাম না এটা একটা বড় ধরনের দূর্বলতা। সেই লক্ষ্যে ভারত, চীনকে কনভিন্স করার কথা যাদের আমাদের দেশে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ আছে। ভারতের সাথে আমাদের বন্ধুত্বের কথা বলা হচ্ছে। সেই ভারত বাংলাদেশের সাথে আলোচনা না করেই মিয়ানমারে গিয়ে বক্তৃতা দিলো । চীনের বিশ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের কথা বলা হচ্ছে। চীন আমাদের সাথে সাথে কোনো শলা পরামর্শ করেনি, আমরাও পারিনি তাদেরকে কনভিন্স করতে।
এদিকে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। এর সবচেয়ে বেশি চাপ যদি বাংলাদেশকে বহন করতে হয় সে ক্ষেত্রে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার। আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে কুটনৈতিক তৎপরতা পরিচালনা করা দরকার, সেই সব ক্ষেত্রে আজকে বড় ধরনের একটা দূর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এখন সারাদেশের জনসাধারণ রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর্ন্তজাতিক বিশ্বের মতামতও রোহিঙ্গাদের পাশে আছে। কিন্তু বড় যে শক্তিসমূহ বিশেষ করে চীন ও ভারত নিরবতা অবলম্বন করছে। বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ আছে এবং তাদের যে সম্পর্ক বিশেষ করে ভারতের সাথে বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্বের কথা যে সরকার দাবি করে, এখন বাস্তবে এসে দেখা গেল যে, ওদের বাণিজ্যিক স্বার্থ ছাড়া তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে বাংলাদেশ পারে নি। যেহেতু বিশ্ব জনমত ফেভারে আছে, তাই কুটনৈতিক তৎপরতাকে কার্যকর করে তোলা দরকার। দেশের অভ্যন্তরে জনগনের অখন্ড মতামতকে ধরে রাখার যে চেষ্টা, সরকারের পক্ষ থেকে একককৃতিত্ব নেয়ার চেষ্টায় কোনরকম বিভ্রান্তি যেন তৈরি না হয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। আর রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণ যদি করতে না পারি, সেটা ভবিষ্যতে একটা নেতিবাচক ফলাফল হবে।
পরিচিতি: সম্পাদক, বাসদ
মতামত গ্রহণ: সানিম আহমেদ
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ