সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে দেশের বাইরে যাচ্ছে প্রায় এক লাখ হাজার কোটি টাকা
জাফর আহমদ : বছরে প্রায় এক লাখ হাজার কোটি টাকা বৈধপথে দেশের বাইরে যাচ্ছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি টাকা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। দ্বিতীয় সিঙ্গাপুর। বিদেশে টাকা পাঠানো ৭ নম্বর দেশ হলো ভারত, ১০ নম্বরে রয়েছে মালয়েশিয়া। এ অর্থের মধ্যে রয়েছে বিদেশি জাহাজভাড়া, এক্সপার্ট ফি, শ্রমিক-কর্মচারীর মজুরি, ব্যবসার মুনাফা, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবাসহ বাংলাদেশিদের ভ্রমণ ও বিভিন্ন খাতের খরচ রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে গেছে ১১,৭৬৩ মিলিয়ন ডলার। টাকার অংকে (প্রতি ডলারে ৮০ টাকা ধরে) প্রায় ৯৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি-এপ্রিল চার মাসে বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে গেছে প্রায় ৩,৯৬৬ মিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। বিদেশে এ সব অর্থ পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে পাঠানো অর্থের পরিমাণ মোট বিদেশগামী অর্থের ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সিঙ্গাপুরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ, সৌদি আরবে ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, চিনে ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ, ভারতে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ, হংকংয়ে ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ, জাপানে ২ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ায় যাচ্ছে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। বাকি অর্থ যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সূত্র অনুযায়ী এসব টাকার ৯৫ শতাংশ যাচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলে। বাকি অর্থ যাচ্ছে বিদেশি একাউন্টের মাধ্যমে।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানের না হওয়ার কারণে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বাইরে যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের বিপুল পরিমাণ জনশক্তি থাকলেও প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে না পারার কারণে দক্ষ জনশক্তি আমদানি করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সেবা, তৈরি পোশাক শিল্প ও আইটি খাতে চাহিদা স্থানীয়ভাবে মেটাতে না পারলে এ অর্থ বাইরে যাবেই।
ট্রান্সপোর্ট ২,৭৬৯ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার, ভ্রমণবাবদ ৪৫৩ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন ডলার, সার্ভিস বাবদ ১,৭৪৪ দশমিক ৪৭, কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষতিপূরণ বাবদ ০ দশমিক ১৩ মিলিয়ন ডলার, সুদ পরিশোধ বাবদ ১,৪১১ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন ডলার, মুদ্রা স্থানান্তর ফি বাবদ বিদেশে পাঠিয়েছে ১৩৬ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার, সরাসরি বিনিয়োগের সুদ বাবদ ১৮০ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার, পোর্ট ফোলিও বিনিয়োগ মুনাফা বাবদ ৪৫৩ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার এবং বিনিয়োগ ফেরত বাবদ ৪৪৯৬ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী