ধীরেন্দ্র নাথ বারুরী
সাধারণত একটি বাহনে দেবীর আগমন এবং অন্য একটি বাহনে তার গমন ঘটে। কিন্তু যে বছর একই বাহনে তার আগমন এবং গমন ঘটে সেই বছর মানবসমাজে বিশেষ অঘটন ঘটার আশঙ্কা থাকে বলে মনে করা হয়। এক নজরে জেনে নেওয়া যাক, দেবী দুর্গার কোন বাহন কোন প্রতীকী অর্থ বহন করে-
হস্তী : অত্যন্ত শুভ প্রতীক। দেব-দেবী ছাড়াও রাজা, মহারাজা, জমিদারদের কাছেও ‘গজ’ রাজকীয় মর্যাদা পেয়েছে। হয়তো তাই দেবী দুর্গার গজে আগমন ও গমনকে কেন্দ্র করে বলা হয়েছে- ‘গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা।’ অর্থাৎ এই আগমন ও গমনে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণ হয়ে মানুষকে সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যে ভরিয়ে তুলবে। যে বছর হস্তীতে আগমন হয় দেবীর সে বছর তার আশীর্বাদে মানবজীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
নৌকা : নৌকায় আগমন ও গমনে বলা হয়েছে ‘শস্যবৃদ্ধিস্তুথাজলম’। এ ক্ষেত্রে প্রবল বন্যা, ঝড়, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির জন্যে একদিকে প্লাবন ও ক্ষয়ক্ষতি এবং অন্যদিকে দ্বিগুণ শস্যবৃদ্ধি। নৌকায় যে বছর আসেন দেবী, সে বছর বন্যার পাশাপাশি কৃষি সমৃদ্ধিও দেখা দেয়।
দোলা : ‘দোলায়’ আগমন ও গমন সবচেয়ে অশুভ। তাই দোলা সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে, ‘দোলায়াং মরকং ভবেৎ’। মহামারি, ভূমিকম্প, যুদ্ধ, মন্বন্তর, খরা ইত্যাদির প্রভাবে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু তো ঘটাবেই, আবার সেই সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতিও হবে। বিশ্বাস অনুযায়ী, যে বছর দেবী দোলায় আসেন, সে বছর মানুষ যদি একে অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলেই একমাত্র এই মহামারীকে রোখা সম্ভব।
অশ্ব বা তুরঙ্গ : দেবীর অশ্ব বা তুরঙ্গে আগমন এক ঘোরতর সর্বনাশের ইঙ্গিত দেয়। ঘোড়া বা ঘোটক দেব-দেবী ও মানুষের কাজে ব্যবহৃত হলেও গজ বা হস্তীর মতো মর্যাদা না দিয়ে ঘোটকে মায়ের আগমন ও গমন নিয়ে বলা হয়েছে ‘ছত্রভঙ্গস্তুরঙ্গমে’। অর্থাৎ ঘোটকে আগমন ও গমনে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংসারিক ক্ষেত্রেও অস্থিরতা প্রকাশ পাবে। যেমন, রাজনৈতিক উত্থান, পতন, সামাজিক স্তরে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, গৃহযুদ্ধ, দুর্ঘটনা, অপমৃত্যু ইত্যাদির প্রভাব বাড়বে।
শাস্ত্র অনুযায়ী এবছর দেবী দুর্গা আসছেন নৌকায় চড়ে, পাঁচদিন ভক্তদের মাঝে অবস্থান করে ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে প্রস্থান করবেন তিনি। নৌকায় আগমন ও গমনে বলা হয়েছে ‘শস্যবৃদ্ধিস্তুথাজলম’। এ ক্ষেত্রে প্রবল বন্যা, ঝড়, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির জন্যে একদিকে প্লাবন ও ক্ষয়ক্ষতি এবং অন্যদিকে দ্বিগুণ শস্যবৃদ্ধি। নৌকায় যে বছর আসেন দেবী, সে বছর বন্যার পাশাপাশি কৃষি-সমৃদ্ধিও দেখা দেয়। দেবীর ঘাড়ায় বা তুরঙ্গে আগমন এক ঘোরতর সর্বনাশের ইঙ্গিত দেয়। ঘোড়া বা ঘোটক দেব-দেবী ও মানুষের কাজে ব্যবহৃত হলেও গজ বা হস্তীর মতো মর্যাদা না দিয়ে ঘোটকে মায়ের আগমন ও গমন নিয়ে বলা হয়েছে-‘ছত্রভঙ্গস্তুরঙ্গমে’। অর্থাৎ ঘোটকে আগমন ও গমনে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংসারিক ক্ষেত্রেও অস্থিরতা প্রকাশ পাবে। যেমন, রাজনৈতিক উত্থান, পতন, সামাজিক স্তরে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, গৃহযুদ্ধ, দুর্ঘটনা, অপমৃত্যু ইত্যাদির প্রভাব বাড়বে।