ডিজিটাল বাংলাদেশ কতদূর!
বাংলাদেশ এখন তথ্য প্রযুক্তিতে টইটু¤¦ুর, এটি অস¦ীকার করার কোন সুযোগই নেই। ব্যক্তি থেকে শুরু করে দেশের সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ছোয়া লেগেছে সেটি যেমন অস¦ীকার করার সুযোগ নেই, তেমনি সরকারি ও বেসরকারি অনেক স্তরে তথ্য প্রযুক্তির ছোয়া যে অনেকক্ষেত্রে নেই সেটিও অস¦ীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু কেন? সরকার থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপ দেয়ার জন্য এতো ঢাকঢোল বাজালেও সরকারি দপ্তরগুলো পিছনে কেন? সরকারি অনেক দপ্তরের মধ্যে ডাক বিভাগ ও আদালতের প্রশাসনিক কার্যক্রমও ডিজিটাল থেকে অনেকটা পিছিয়ে। কিন্তু কেন? এর উত্তরই বা কে দিবে? এর রহস্য আসলে কি? প্রশ্ন জাগে, এতো কিছুর পরেও ডিজিটাল বাংলাদেশ কতদূর?
শুধু শহর নয়, গ্রামাঞ্চলের তরুণ ও তরুণীসহ সকল পেশাজীবী মানুষ এখন ইন্টারনেট সেবায় অনেকটা এগিয়েছে। বর্তমান বিশ্ব চলছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। ইন্টারনেট ছাড়া আমরা কোনো কিছু চিন্তা করতেই পারি না। আমাদের জীবনধারার অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো এটি। পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় এসেছে ইন্টারনেটের কল্যাণে। এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেরা এন্ড্রয়েড মুঠোফোনের মাধ্যমে ভর্তি থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশন এবং ফলাফল কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। গ্রামের মানুষ বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদনপত্র ঘরে বসেই পূরণ করছে অনলাইনে। যেটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান ডিজিটাল সিস্টেমাইজেশনের কারণে, এটিও অস¦ীকার করার সুযোগ নেই। ‘বাংলাদেশ জাতীয় ওয়েব পোর্টাল’ চালু করা হয়। এতে ইংরেজি ও বাংলা দুটো ভার্সন যুক্ত হয়। এটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি যেমন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ, জাতীয় সংসদ, বিচারব্যবস্থা, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, নাগরিক সেবা, ব্যবসায়িক সেবা, সার্কুলার প্রভৃতি বিষয় দ্বারা সমৃদ্ধ করা হয়েছে। পোর্টালগুলোতে সরকারি দিনপঞ্জিকা, সার্কুলার, গেজেটসমূহও পাওয়া যায়। তাছাড়াও রয়েছে সরকারি বিজ্ঞাপন, প্রতিদিনের মুদ্রার হার, পোস্টাল কোড, পাসপোর্ট ও ভিসাসংক্রান্ত তথ্যাদি, আয়কর, শিক্ষাব্যবস্থা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কৃষি তথ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা স্বপ্ন দেখি একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। এ দেশটি পরিচালিত করতে হলে সকল ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি বা ডিজিটালাইজেশনের ব্যবস্থা দরকার। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। সমগ্র দেশকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা সেই অঙ্গীকারের একটি অংশ। ডিজিটালের কারণে আজ সেকেন্ডের মধ্যে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে কোটি টাকা পৌছে যায়। দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে চালু করা হয়েছে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র ও ব্যাংকিং সুবিধা, চাষি খুব সহজে সেবা পাচ্ছে, বিদ্যুৎ বিল এখন ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র থেকে দিতে পারছে। ডিজিটালের কল্যাণে প্রতি মুহুর্তের খবর অনলাইনের মাধ্যমে দেশবাসিসহ বিশ্বের অসংখ্য পাঠক জানতে পারে। কিন্তু এতো কিছুর পরেও অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটালের ছোয়া লাগেনি। ডাক বিভাগ, ভূমি খাতসহ আদালতের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ডিজিটালের খুব বেশি ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে না।
লেখক: সাংবাদিক / সম্পাদনা: আশিক রহমান