অমিতানন্দ ভিক্ষু : নিজের সুকৃত-দুষ্কৃত বা সুচারিত-দুশ্চারিত কর্ম সমূহের ফল ও বিপাক আছে। কর্ম বিপাক হল, নিজের এসব কৃত কর্মের অনুরূপ ফল ভোগ করা। বুদ্ধের অবর্তমানে ভিক্ষু সংঘের অদ্বিতীয় ক্ষমতার অধিকারি হবার মানসে দেবদত্ত অজাতশত্রুর সাথে চক্রান্ত করে ভগবান বুদ্ধের জীবন বিনষ্ট করার জন্য মগধরাজের হাতিশালার সবচেয়ে প্রচ- রাগি ও বদ স্বভাবের হাতি নালগিরিকে মধ্য পানে মত্ত করে বুদ্ধের পি-পাত সংগ্রহের গমণ পথে ছেড়ে দিলেন বুদ্ধের প্রাণ নাশের জন্য। বুদ্ধ সেদিন মৈত্রী (পারমিতা) বারি সিঞ্চন পূর্বক সেই নালাগিরি হাতিকেও জয় করেছিলেন। তদুপরিও, বুদ্ধের প্রতি আক্রোশ পূর্বক দেবদত্ত নালাগিরি হস্তীকে মদমত্ত করে বুদ্ধের চলার পথে ছেড়ে দেয়ার ঘটনাটি নিছক কোনো ঘটনা ছিল না। এতে জড়িয়ে ছিল মহাকারণিক বুদ্ধের অতীত জন্মের কর্ম বিপাক। এবং দ্বাদশ কর্ম বিপাকের মধ্যে ইহা ছিল গৌতম বুদ্ধের সপ্তম কর্ম বিপাক। এর কারণ বা পূর্বযোগ হল, অতীত এক জন্মে গৌতম বুদ্ধ হাতির মাহুত হয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। একদিন তিনি হাতির পিঠে অবতরণ পূর্বক রাস্তা দিয়ে যাবার সময় এক পচ্চেক বুদ্ধকে দেখতে পান। এমন সময় হঠাৎ তার মনে দুষ্টুমির উদয় হওয়ায় ভয় প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে সেই পচ্চেক বুদ্ধের পিছন দিকে অগ্রসর হন। পরবর্তীতে এ দুষ্কর্মের জন্য তিনি পচ্চেক বুদ্ধের নিকট ক্ষমাও চান। তা সত্ত্বেও এ পাপের ফলে জন্ম-জন্মান্তর ব্যাপী গৌতম বুদ্ধকে বহুবার নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় এবং সর্বশেষ অন্তিম জন্মে বুদ্ধও হয়ে সেই কু-কর্মের বিপাক ভোগ করতে হয়।