মিথ্যা বলা খুবই ভয়াবহ অপরাধ
প্রথমত কোন মুমিন মিথ্যা বলতে পারেনা, আর যে মিথ্যা বলে সে মুমিন থাকেনা! মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে আর সত্য নাজাত দেয়! সত্যবাদিতা সম্পর্কে আল্লাহপাক বলেছেন, হে ইমানদাররা তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সহযোগী হও! এর থেকে আমরা বুঝতে পারি মুমিনের জন্য সত্য বলা আবশ্যক!
ইসলামি শরিয়তে মিথ্যা বলা সম্পূর্ণ নিষেধ। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিথ্যা পরিহার করা ও সত্য বলার বিষয়ে অনেক বেশি সতর্ক করেছেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে,রাসুল (সা.) তোমরা সত্যকে অবলম্বন করো! কারণ সত্যবাদিতা ভালো কাজে উপনীত করে! আর ভালো কাজ উপনীত করে জান্নাতে। মানুষ যখন দুনিয়াতে সত্য বলে ও সত্যবাদিতার অন্বেষায় থাকে! সে আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে লিখিত হয়! আর মিথ্যা থেকে দূরে থাকো! কারণ মিথ্যা উপনীত করে পাপাচারে! আর পাপাচার উপনীত করে জাহান্নামে। যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে ও মিথ্যার অন্বেষায় থাকে, এভাবে একসময় আল্লাহর কাছে সে চরম মিথ্যুক হিসেবে লিখিত হয়ে যায়’!
এ হাদিসের আলোকে আমরা বুঝতে পারি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যকে অবলম্বন করার এবং মিথ্যা থেকে দূরে থাকার তাগিদ দিয়েছেন! এ জন্য সত্য বলা ফরজ। মিথ্যা বলা হারাম। যে কোনো চিন্তাশীল মানুষ উপলব্ধি করতে পারেন! সত্য বলা একটি উৎকৃষ্ট গুণ; আর মিথ্যা বলা একটি নিকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য! ভালো মানুষ কখনো মিথ্যা বলতে পারে না! সত্য বলা ধর্মীয় দৃষ্টিতে যেমন ফরজ, তেমনি বুদ্ধির দিক থেকেও এক উত্তম ও অপরিহার্য মানবীয় বৈশিষ্ট্য! ভালো মানুষ হওয়ার জন্য সত্যবাদিতার কোনো বিকল্প নেই! সত্যাবাদী সবার কাছে প্রিয় হয়! মিথ্যা একটি ব্যাধি। এর পরিণাম খুবই ভয়াবহ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিথ্যার পরিণাম সম্পর্কেও অনেক হাদিস বলেছেন। একটি হাদিসে তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা মিথ্যা থেকে দূরে থাকো, কারণ মিথ্যা ইমানের পরিপন্থী’! আরো একটি হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে স্বভাবগত বিভিন্ন দোষত্রুটি থাকতে পারে। তবে সে মিথ্যুক ও প্রতারক হতে পারে না। ( ইবনে আবি শায়বার হাদিস )
মিথ্যা ইসলামের দৃষ্টিতে অতি গর্হিত, অবশ্য-বর্জনীয়! মিথ্যা বলা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য, পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মিথ্যাবাদীর শাস্তির কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেছেন, তাদের হৃদয়ে আছে একটি রোগ, আল্লাহ সে রোগ আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর যে মিথ্যা তারা বলে তার বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি! ওদের যখন বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে অনাচার করো না, তারা বলে, আমরা তো শান্তি স্থাপনকারী। জেনে রাখো, ওরাই অনাচার বিস্তারকারী, কিন্তু ওদের চেতনা নেই (সুরা বাকারা,)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আরো বলেছেন, ইমানদাররা! আল্লাহকে ভয় করো আর সঠিক কথা বলো (সুরা আহজাব) সুতরাং আমাদের সাবধান হতে হবে, সতর্ক হতে হবে! আমাদের কর্তব্য, সব প্রবণতার বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং নিজ আচরণ-উচ্চারণকে পবিত্র রাখা। আমরা যে কথাটি বলছি, তা সঠিক কিনা, ন্যায়সঙ্গত কিনা! সঠিক হলে বলব, না হলে বলব না। একজন মুমিন যদি এই চেষ্টায় থাকেন, সত্যবাদিতার অন্বেষায় থাকেন আর আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন, তাহলে আল্লাহপাক তাকে সত্যবাদিতার গুণ দান করবেন! আর যিনি তা লাভ করবেন, তিনি তো এক মহাসম্পদ লাভ করবেন! আল্লাহতাআলা আমাদের সকল প্রকার মিথ্যা ও তার ভয়াবহ পরিণাম থেকে বাঁচার ও সত্য বলার গুণ ও বৈশিষ্ট্য অর্জন করার তৌফিক দান করুন! আমিন