মিয়ানমারে শান্তিচুক্তির দ্বিতীয় বার্ষিকীতে রাখাইন সংকটের অহিংস সমাধানের আহ্বান
ইমরুল শাহেদ : মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত ‘ন্যাশানওয়াইড সীসফায়ার এগ্রিমেন্ট’-এর দ্বিতীয় বর্ষ পালিত হলো রোববার। এই উপলক্ষ্যে দেশটির রাজধানী নাইপিদোতে বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। তাতে সভাপতিত্ব করেন স্টেট কাউন্সির ও ডি-ফ্যাক্টো রুলার অং সান সুচি। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে নেতৃস্থানীয় একটি নন-স্টেট সশস্ত্র গ্রুপ সরকারকে রাখাইন রাজ্যের সংকটের মর্যাদাপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত একটি রাজনৈতিক সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। অন্যথায় সরকারের শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। এদিন কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) এক বিবৃতিতে জানায়, রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে দীর্ঘদিন থেকে চলমান বিবাদ মীমাংসা করতে তারা এখনো বদ্ধপরিকর।
যাহোক বার্ষিকীতে আগস্ট মাসে উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনে যে সেনা অভিযান চালানো হয়েছে তার সমালোচনা করা হয়। সেখানকার ঘটনা এবং বিদ্রোহ দমনের যে প্রচারণা সেনা বাহিনী চালিয়েছে তা মিয়ানমারের অন্যান্য এলাকায়ও চালানো হয়েছে। কেএনইউ‘র এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে সৃষ্ট সংকট সরকার এবং তাতমাদোরা (সেনা বাহিনী) যেভাবে মোকাবিলা করছে তা বিভিন্ন সেনা অভিযানের মধ্য দিয়ে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন এবং কারেন জনগণ এ ধরনের সময় পার করে এসেছে।’ কেএনইউ’র বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যখন দেশে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে তখন কারেনরা আর এ ধরনের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না। তাতে শান্তি প্রক্রিয়া বিঘিœত হতে পারে।’ বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়, সরকার এবং সেনা বাহিনী অহিংস পথ ধরে রাজনৈতিকভাবে রাখাইনের বর্তমান সংকটের উত্তরণ ঘটাবেন।
রাখাইন রাজ্যের ঘটনাবলি নিয়ে রোববারের এই বিবৃতিটিই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য, যা ন্যাশনওয়াইড সীসফাযার এগ্রিমেন্টে অংশগ্রহণকারীদের স্বাক্ষরিত। কারেন ওম্যান’স অর্গেনাইজেশনের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের উপর সেনা বাহিনীর নির্যাতনের নিন্দা জানাতে অং সান সুচির প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে ১৯৪৭ সালে। তারা বিগত কয়েক দশক থেকেই সফলভাবে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে লড়াই করে চলেছেন। তাদের যুদ্ধের সময় প্রায় এক লাখ কারেন শরণার্থী থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন ১৯৮০ সালের দিকে। তাদের বেশির ভাগই এখনও সেখানেই রয়ে গেছেন। এই সময়ে মিয়ানমারের সেনা বাহিনীর মানবাধিকার লংঘনের জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। সেনা অভিযানের সময় কারেন বেসামরিক লোকদের হত্যা, ধর্ষণ ও বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে গণহারে। সূত্র : ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার