স্মরণ সভায় ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা,সিএসসি
ড. ফাদার লেনার্ড শংকর রোজারিও, সিএসসি
২০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল ৫টায় নটর ডেম কলেজ অডিটরিয়ামে একটি কালো পর্দা উন্মোচনের সাথে সাথে উপস্থিত দর্শকদের মাঝে নেমে আসে পিনপতন নিরবতা। মঞ্চে তখন মোমের আলোয় উদ্ভাসিত হয় প্রয়াত ফাদার বেঞ্জামিন কস্তার, (সিএসসি) পুষ্পমাল্য জড়ানো একটি ফটোগ্রাফ। মানবতার কল্যাণে আত্মোৎসর্গকারী এই দূতকে উপস্থিত দর্শকরা নতুন করে আবিষ্কার করেন তাঁর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, বহু গুনগ্রাহী, সহকর্মী আর সাবেক ছাত্রদের স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে।
নটর ডেম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা, সিএসসি’র প্রয়াণ উপলক্ষে নটর ডেম কলেজ গত শুক্রবার বিকেলে এক স্মরণ সভার আয়োজন করে। ফাদার বেঞ্জামিনের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ওপর একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ড. ফাদার লেনার্ড শংকর রোজারিও সিএসসি কর্তৃক বাইবেল পাঠ ও ফাদার সুশান্ত আন্তনী গমেজ সিএসসি কর্তৃক সার্বজনীন প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব।
নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফাদার হেমন্ত পিউস রোজারিও সিএসসি, ফাদার বেঞ্জামিন কস্তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ফাদার বেঞ্জামিন অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। তাঁর হাত অনেক বড় ছিল। তিনি তার এই হাত দিয়ে অনেক মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করতে পেরেছিলেন। ফাদার বেঞ্জামিনের কর্মময় জীবনের অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, ফাদার বেঞ্জামিনের পায়ের জুতো এত বড় ছিল যে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বয়ে বেড়ানো সম্ভব নয়। এ সময় তিনি ফাদার বেঞ্জামিনের কর্তব্যপরায়ণতা, সময়নিষ্ঠতা, নিয়মানুবর্তিতা, দায়িত্ববোধ ও লক্ষে অবিচল থাকার বিভিন্ন দৃষ্টান্তের কথা তুলে ধরেণ।
স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন ড. মঈন খান। তিনি ফাদার বেঞ্জামিনের সাথে তার বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, সহপাঠী হিসেবে ফাদার বেঞ্জামিনকে তিনি চোখের সামনেই অনেক বড় মাপের মানুষ হয়ে উঠতে দেখেছেন, কিন্তু তার সহজ স্বাভাবিক জীবনের কোন পরিবর্তন হতে দেখেননি। এ সময় তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে ফাদার বেঞ্জামিনের অবদানের কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন।
নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফাদার প্যাট্রিক ডি. গ্যাফনি সিএসসি বলেন শিক্ষা ব্যবস্থায় অবদান রাখার জন্য ফাদার বেঞ্জামিন বাংলাদেশের মানুষের কাছে স্বরণীয় হয়ে থাকবেন। তার একাগ্রচিত্তের কথা তুলে ধরতে গিয়ে ফাদার প্যাট্রিক বলেন, ফাদার বেঞ্জামিনের স্বার্থকতা এখানেই যে, তিনি যা করতে চেয়েছেন তা পরিপূর্ণ ভাবে করতে পেরেছিলেন।
দেবদূততুল্য এই মানুষটির সাথে নিজেদের স্মৃতিটুকু ভাগাভাগি করে নিতে মুসলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্মরণ সভায় উপস্থিত হন ফাদার যে. এস পিশোতো সিএসসি, বটমলী হোমস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সি.
মেরী দিপ্তী এসএমআরএ, কারিতাস বাংলাদেশ সিডিআই’র পরিচালক থিওফিল নকরেক, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের অধ্যক্ষ আবু বকর চৌধুরী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধান, বহু গুনগ্রাহী, ফাদার বেঞ্জামিনের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, তাঁর সহকর্মীবৃন্দ, নটর ডেম কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক এবং ছাত্রবৃন্দ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান ও ইংরেজী বিভাগের শিক্ষিকা মিসেস রীটা রোজারিও।