ড. বরোসম্বোধি ভিক্ষু : তথাগত বুদ্ধ ভিক্ষু-ভিক্ষুণী উভয়কে সমদৃষ্টিতে দেখতেন। কোনো রকম লিঙ্গবৈষম্য করতেন না। ভিক্ষুদের মতো ভিক্ষুণীরাও সমমর্যাদা ও সমানভাবে দানের অংশীদার হতেন। একটা ঘটনার কথা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। একবার আটখানা চীবর ভিক্ষু এবং ভিক্ষুণী উভয় সঙ্ঘের উদ্দেশ্য দান করা হয়েছিল যেখানে কেবল মাত্র একজন ভিক্ষুণী এবং চারজন ভিক্ষু ছিলেন। বুদ্ধ সমানভাবে চীবরের বন্টন করে চারখান ভিক্ষুণীদের এবং চারখান ভিক্ষুদের দিলেন। কারণ উভয় সংঘের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত হওয়ায় একজন ভিক্ষুণী থাকলেও বুদ্ধ সমভাবে ভাগ করেছিলেন।বুদ্ধ আরো লক্ষ্য করেছেন উপাসকদের গৃহে ভিক্ষুদের তুলনায় ভিক্ষুণীরা নিমন্ত্রণ কম পেতেন। ভিক্ষুরা উপাসকদের গৃহে যা দান পেতেন বুদ্ধের নির্দেষে সেসব দানীয় বস্তু সংঘারামে এলে ভিক্ষু ও ভিক্ষুণী উভয় সংঘে সমভাবে বণ্টন করা হতো। এভাবে বুদ্ধ চাইতেন ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীর সম্পর্ক থাকবে ভ্রাতা ও ভগ্নীর মতো। প্রভু এবং চাকরের মতো নয়। ভিক্ষু-ভিক্ষুণীর মধ্যে উৎকৃষ্ট-নিকৃষ্ট বা উত্তম-অধম পদের সম্পর্ক বিনয় বিরুদ্ধ। ভিক্ষুনীদের মর্যাদা রক্ষায় বুদ্ধ আরো বলেছেন, এক সময় ছয়জন ভিক্ষু তাদের পরিধেয় অন্তর্বাস উপরের দিকে তুলে ভিক্ষুণীদের উদ্দেশ্যে উরু প্রদর্শন করছিল। এ বিষয়ে বুদ্ধ জানতে পারলে তিনি বিনয়ের নিয়ম সংস্কার করে বলেন, ‘এ জাতীয় অবিনয়ী ভিক্ষুদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের প্রয়োজন নাই। প্রত্যেক ভিক্ষুকে ভিক্ষুণীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে হবে না। কেবল মাত্র যাঁরা শ্রদ্ধা-বন্দনার যোগ্য তাঁদেরই শ্রদ্ধা জানাতে হবে।’ লেখাটি ড. বরোসম্বোধি ভিক্ষু । নারী জাগরণে বুদ্ধের বলিষ্ঠ ভূমিকা, ভিক্ষুণী সংঘ প্রতিষ্ঠা, ভিক্ষুসংঘের অসহযোগিতা প্রবন্ধ থেকে অংশবিশেষ (গৌতমী সাময়িকী তৃতীয় সংখ্যা থেকে নেয়া।