ইসলামে পরিবেশ সৌন্দর্য মো: আবু তালহা তারীফ
পরিবেশ আমাদের চারপাশের পরিমন্ডল, আকাশ,বাতাস, পাহাড়-পর্বত,মাটি,পানি, গাছপালা নিয়েই তৈরি। এগুলো সবকিছু মহান আল্লাহর অপূর্ব নিয়ামত। মহান আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে বলেছেন, আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি এবং এতে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছি,আমি পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তু সুপরিমিতভাবে সৃষ্টি করেছি এবং এতে তোমাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করেছি, আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও,তাদের জন্যও। প্রতিটি বস্তুর ভান্ডার আমার কাছে আছে এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমানেই সরবরাহ করে থাকি। আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরন করি, অতপর আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করতে দিই, ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই। (সূরা আল হিজর-১৯-২২)
ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। রুচিশীলতা ও সেীন্দর্য ইসলামের সহজাত ও প্রাকৃতিগত বিষয়, শ্রেণিকক্ষ বিদ্যালয় ঘরবাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার থাকলে চলতে ফিরতে মনে স্বচ্ছন্দ্যবোধ আসে এবং কাজে আনন্দ পাওয়া যায় রাসুল(সা.) বলেন, তোমরা তোমাদের আঙ্গিনাকে পরিষ্কার রাখ। তাছারা রাসুল (সা.) বলেন, ঈমানের ৭০টি বা এর চেয়ে ক্ষশী কিছু শাখা রয়েছে এর মধ্যে সর্ব নিম্ম হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক আবর্জনা সরানো। (বুখারী)
পরিবেশে জীবের বাসোপযোগী গুরুত্বপূর্ন উপাদান হচ্ছে, মাটি ও পনি। মাটি থেকে শষ্য উৎপাদিত হয়। এই উৎপাদিত শষ্য পানি দ্বারা জীবিত থাকে। মহান আল্লাহপাক বলেছেন, তিনিই তোমাদের জন্য মাটির শয্যা বিছিয়েছেন, আকাশের ছাদ তৈরি করেছেন, ওপর থেকে পানি বর্ষণ করেছেন এবং তার সাহায্যে সব রকমের ফসলাদি উৎপন্ন করে তোমাদের আহার যুগিয়েছেন। কাজেই একথা জানার পর তোমরা অন্যদেরকে আল্লাহর প্রতিপক্ষে পরিণত করো না। (সূরা বাকারা-২২)
পরিবেশের বাহ্যিক আরো একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হচ্ছে আলো। মহান আল্লাহপাক বলেছেন, তারা কি অনুধাবন করেনা যে, আমি রাত সৃষ্টি করেছি তাদের বিশ্রামের জন্য এবং দিনকে করেছি আলোকিত,এতে মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। (সূরা নামল-৮৬)
পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে ইসলাম বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। পরিবেশ দূষনমুক্ত রাখার জন্য ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। পেিবশে দূষন নিয়ে বিশ্বে চলছে ব্যাপক আলোচনা। পরিবেশ দূষনের ফলে সমাজে চলছে ভাঙন, বিশৃঙ্খলা, নষ্ট হচ্ছে জীবন ও সম্পদ, বাড়ছে অশান্তি ও অস্থিরতা। দূষনের কারনে রোগ, জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে অগনিত মানুষ। কেননা হাচি ও কাশি দেওয়ার সময় মুখ না ঢেকে দেওয়ার কারনে নির্গত ময়লা ও জীবানু দ্বারা পরিবেশ দূষন ও অন্যের ক্ষতি করে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্নিত,রাসুল(সা.) বলেন, যখন হাঁচি দিতেন তখন তিনি তার মুখ ঢেকে নিতেন।
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের জন্য অবশ্যই ইসলামের আলোকে পরিবেশ সংরক্ষনে গাছপালা রোপন করা অবশ্যই প্রয়োজন। গাছপালা মানুষ ও জীবজন্তুর জন্য খাদ্য সরবারহ করে এবং পরিবেশকে দূষন মুক্ত করে। হজরত আয়েশা (রা.) বর্নিত, রাসুল(সা.) বলেন, যদি নিশ্চতভাবে জানো যে,কিয়ামত এসে গেছে,তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে যা রোপন করা যায়, তবে সেই চারাটি লাগাবে পরিবেশ সর্বসময় সংরক্ষন করতে হবে।