আজিমপুরে আওয়ামী লীগ মারে আওয়ামী লীগকে
মাসুদ আলম : রাজধানীর আজিমপুরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় গ্রুপের প্রায় ১৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও ৪টিতে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আজিমপুর পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ এবং মেয়র সাঈদ খোকনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৩ জনকে আটক করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সকালে পার্ল কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ পূর্বনির্ধারিত প্রস্তুতি সভা করছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ায় আগামী ১৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভা ছিল এটি। সেখানে কামরাঙ্গীর চর, লালবাগ ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিও ছিল। পাশেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকনের ছিল পাল্টা কর্মসূচি। সেজন্য সকাল থেকে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। এদিকে কে বা কারা কমিউনিটি সেন্টারের প্রবেশমুখে সিটি কর্পোরেশনের গাড়িতে করে ময়লা এনে ফেলে স্তূপ করে রাখে। এজন্য মুরাদ সমর্থকরা সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে সেøাগান দিতে থাকে। অপরদিকে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার আবু আহমেদ মান্নাফিকে ‘লাঞ্ছিত’ করার প্রতিবাদে কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করে মেয়র অনুসারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে অজ্ঞাত স্থান থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ। লাঠিসোটা নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। মুরাদের অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম আসলেও দীপুমনি আসেননি। শাহে আলম মুরাদ বলেন, আমাদের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে রাতে কমিউনিটি সেন্টারের ঢোকার মুখে সিটি কর্পোরেশনের গাড়িতে করে ময়লা এনে ফেলা হয়। তারপরও এসব বিষয় উপেক্ষা করে তিনি সভা করেছেন । আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না।
কমিশনার মান্নাফি বলেন, ময়লার মালিক তো আর আমি না। অনেক সময় গাড়ির সংকট থাকে অনেক জায়গায় ময়লা জমে থাকে। হয়ত সরিয়ে নিয়ে যাবে। আসলে তারা বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিতা করে। এদিকে ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে সাঈদ খোকন ও মুরাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্য হয় সম্প্রতি মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। সেদিন মুরাদের অনুসারীরা মেয়র সমর্থক আবু আহমেদকে টেনে মঞ্চ থেকে ফেলে দেন বলে জানা গেছে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সেখানে এক অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে বলেন, আজ যেভাবে অনৈক্য দেখাচ্ছেন, তা কখনো শুভকর নয়। এভাবে চললে আগামীতে আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসবে না।
পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি ইব্রাহিম খান বলেন, একই স্থানে দুটি গ্রুপ সমাবেশ করতে চেয়েছিল। এছাড়া সমাবেশের অনুমতি ছিল না। উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ালে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন