আয়কর মেলা শহর থেকে গ্রামমুখী ৮ বছরে আদায় বেড়েছে ১৯ গুন
জাফর আহমদ: ২০১০ সালে শহর কেন্দ্রীক দুটি ভেন্যুতে আয়কর মেলা শুরু হয়েছিল। সে বছর আদায় হয়েছিল ১১৩ কোটি টাকা। আচ বছরের ব্যবধানে ২০১৭ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১৬৭টিতে ভেন্যু চলা মেলায় আদায় হয়েছে ২ হাজার ২১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যা ১০ সালের আদায়ের প্রায় ১৯ গুন। সময়ের প্রয়োজনে মেলার ভেন্যু আর শহরকেন্দ্রীক নেই এ বিস্তুতি ঘটেছে রাজধানী থেকে বিভাগীয় শহর এবং জেলা শহর হয়ে উপজেলা পর্যন্ত। আগামীতে গ্রামীণ অর্থনৈতিক ‘গ্রোথ’ সেন্টারগুলোতে আয়কর মেলা করার চিন্তা-ভাবনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আয়কর হচ্ছে ব্যক্তির আয়ের অংশ, যা তার পকেট থেকে দেশের উন্নয়নে সরকারের কোষাগারে দেওয়া হয়। যা বরাবরই এই দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্কটা তিক্ততার। কিন্তু রাজস্ব বোর্ড ২০১০ সাল থেকে এই তিক্ততার সম্পর্ককে বাঙালীর পৌষ পার্বণের ঐতিহ্যের ধারাতে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। প্রথম বছরেই ৬০ হাজার ৫১২ জন মেলাতে আসে। আয়কর রিটার্ন জমা দেয় ৫২ হাজার ৫৪৪টি। আয়কর আদায় হয় ১১৩ কোটি টাকা। দ্বিতীয় বছরে আয়কর আদায় উঠে ৪১৪ কোটিতে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় ভেন্যু, টিআইএন গ্রহণ ও সেবা গ্রহণের সংখ্যা।
রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, আয়কর মেলার পরিবেশ থাকে অনেকটা বাঙালীর চিরায়ত পৌষ পার্বণের উৎসবের মত। এ কারণে মেলায় করদাতারা রিটার্ন জমা দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। এরই ধারাবাহীকতায় সর্বশেষ চলতি নভেম্বর মাসের সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলায় আদায় হয়েছে ২ হাজার ২১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যা আগের বছরের চেয়ে ৮৭ কোটি টাকা বেশি। আয়কর রিটার্ন জমা পড়ে গতবছরের চেয়ে ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি অথ্যাৎ ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৭টি বেশি। এবং সেবা গ্রহণ করেছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৯ জন। যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি।
আয়কর জমায় এই আনন্দঘন পরিবেশ ও রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করবান্ধব মনোভাব সারা বছর ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে একই পরামর্শ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। আয়করবান্ধব পরিবেশ কামনার পাশাপাশি গ্রাম পর্যন্ত আয়কর মেলা বিস্তৃত করার পরামর্শ দিয়েছেন মানবজমিন সম্পাদক মতিউর চৌধুরী। এর জবাবে রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেছেন, উপজেলায় কর অফিস করার পাশাপাশি কর নেটওয়ার্ক গ্রামীণ অর্থনৈতিক ‘গ্রোথ’ সেন্টারগুলো পর্যন্ত বিস্তৃত করা হচ্ছে। যাতে কর আদায়ের এই ধারা অব্যাহত থাকে। পাশাপাশি তিনি কর আদায়ে উৎসবের পরিবেশও বজায় রাখার প্রত্যাশা করেন। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন