দুই মহা মনীষীর অন্তিমকথা মাহমুদা তাবাসসুম
সন্তানদের উদ্দেশ করে হযরত আলী. রা বলেন, ‘স্বতঃস্ফূর্ত ইবাদত করে ইসলামের পথে অটল থেকে মৃত্যুবরণ করবে, সবাই মিলে আল্লাহর রশি মজবুত করে আঁকড়ে ধরবে, পরস্পরে মিলেমিশে থাকবে। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেনÑপরস্পরে মিলেমিশে থাকা নামাজ, রোজার চেয়েও উত্তম। আত্মীয়স্বজনদের খেয়াল রাখবে, এতিম ও প্রতিবেশীদের সর্বদা সাহায্য করবে। কোরআন, নামাজ, জাকাত, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ, জিম্মিদের হক এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা থেকে গাফেল থেকো না। দোয়া ক’রো, আল্লাহ যেনো আমাদের সবাইকে হেদায়েত নসিব করেন এবং সর্বোতভাবে দুনিয়ায় লিপ্ত হয়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখেন।’ ইবনে মিলহামের আক্রমণের পর হুঁশ ফিরে এলে লোকেরা আবেদন করলোÑ‘হজরত হাসান বা অন্য কাউকে আপনার পর খলিফা নিযুক্ত করে দেন।’ তখন তিনি বললেনÑ‘তোমাদেরকে ওই জিনিসের ওপর ছেড়ে যাবো, যার ওপর রাসুল (সা.) আমায় ছেড়ে গেছেন।’ এরপর হত্যাকারীর ব্যাপারে বললেনÑ‘তাকে ভালো খাবার ভালো বিছানা দেবে এবং তার সম্মানের প্রতি খেয়াল রেখে তার সঙ্গে কথাবার্তা বলবে। তোমরা কি চাও, আল্লাহ এবং তার রাসুলকে মিথ্যা সাব্যস্ত করা হোক?’ হজরত ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন, ‘রাজা-বাদশা থেতে দূরে থাকবে এবং তাদের আগুনের মতো ভয় করবে। অতি প্রয়োজন ছাড়া তাদের দরবারে যাবে না, তাহলে ইলমের সম্মান বজায় থাকবে। নির্জনে বাদশার ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে বলবে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর খেলাফ কাজ ক’রো না। যদি সে না মানে, তার জন্য দোয়া করবে। তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে এবং তাকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করবে। ইলমেদীন অর্জনকে প্রধান্য দেবে।
এরপর বৈধপন্থায় মাল উপার্জন করবে। সাধারণত সম্পদ ও জ্ঞান একসঙ্গে অর্জিত হয় না। উলামায়ে কেরামের সঙ্গে ইলমি আলোচনা করবে, অন্যদের সঙ্গে নয়। বিনা প্রয়োজনে উস্তাদের সমালোচনা ক’রো না। তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকো। ছাত্রদের নিজের সন্তান মনে করবে। মাসআলার উত্তর প্রয়োজন মাফিক দেবে। দীনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও আকাইদ সংক্রান্ত মাসআলা সাধারণ লোকদের সঙ্গে আলোচনা করবে না। পার্থিব বিষয়ে বেশি আলোচনা করবে না; করলে মানুষজন তোমায় লোভী মনে করবে।’