হাটবাজারগুলোর নোংরা পরিবেশ এবং বিপণনের দুর্বলতা সবজি বাজার সম্প্রসারণের অন্তরায়
মতিনুজ্জামান মিটু : কারওয়ান বাজারসহ দেশের হাটবাজারগুলোর নোংরা পরিবেশ এবং কৃষকপর্যায় থেকে বিপণনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক সবজি বাজার সম্প্রসারণের অন্তরায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ (প্লান্ট কুয়ারেন্টাইন) উইং উপ-পরিচালক (রপ্তানি) মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াও বিপণনের দুর্বলতায় কৃষকের উৎপাদিত শাক-সবজি ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কৃষক ক্ষেত থেকে শাক-সবজি তুলে কোন রকমে নোংরা পানিতে ধুয়ে হাটবাজারে এনে ধুলামাটির মধ্যে রাখেন। সেখান থেকে ব্যাপারি ও ফড়িয়ারা শাক-সবজি কিনে পুঁথিগন্ধময় ট্রাক বা অন্য কোনো পরিবহণে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের নোংরা পরিবেশে রাখেন। এতে কৃষকের উৎপাদিত শাক-সবজি ভয়ংকর ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। শাক-সবজির বিপণনের এই নোংরা পরিবেশের কারণে দেশের মানুষ সব সময় আতংকের মধ্যে থাকে।
কারওয়ান বাজারের এই নোংরা পরিবেশ দেখে বিভিন্ন সময়ে আসা কোনো বিদেশির মনে বাংলাদেশের শাক-সবজি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হতে পারে। এই ভয়ে অনেক সময় বাংলাদেশে আগত বিদেশিদের কারওয়ান বাজার এড়িয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ে আনা-নেয়া করতে হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষি কর্মকর্তা জানান। এ বিষয়ে সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান প্রকল্প-২য় পর্যায় (বিপণন অংগ)-এর প্রকল্প পরিচালক শাহনাজ বেগম নীনা বলেন, কৃষকপর্যায় থেকে বিপণনের বিভিন্ন পর্যায়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষণ জ্ঞানের অভাবে শাক-সবজি ও ফলমূলের বিরাট অংশ নষ্ট হয়ে যায়। যা শতকরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ। বিপণনের এই দুর্বলতায় উৎপাদিত পণ্যের গুণমান নষ্ট হয়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ। তাই শাক-সবজি ও ফলমূলের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের নিরাপদ ব্যবস্থা নেয়া অত্যন্ত জরুরি। দেশের সব মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি বিপণন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এতে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের অপচয় রোধ ও পুষ্টি নিশ্চিত হবে। আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের ঝুঁকিও কাটবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ