পুণ্যপিতার বিশেষ খ্রিস্টযাগ হবে রাজধানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
খ্রিস্টীয় দর্পণ ডেস্ক : পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপনাদের সুস্বাগত জানাই। বাংলাদেশে পোপ মহোদয়ের আগমন ও অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ আমাদের প্রত্যেকের জন্য তীর্থযাত্রা ও আশীর্বাদস্বরূপ। আর প্রত্যেককে তীর্থযাত্রীর মনোভাব নিয়েই এ সমস্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
(ক) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পবিত্র খ্রিস্টযাগ
১. আপনি যে ধর্মপল্লীতে বা প্রতিষ্ঠানে নাম রেজিষ্ট্রেশন করেছেন, সেখান থেকেই পবিত্র খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণের জন্য গেইট পাস সংগ্রহ করবেন।
২. দয়া করে আপনার গেইট পাস অবশ্যই সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন। এই গেইট পাস হস্তান্তরযোগ্য নয়। গেইট পাশ ছাড়া কাউকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে না।
৩. বাস ও অন্যান্য যানবাহনযোগে আপনারা শাহবাগ মোড় পর্যন্ত যেতে পারবেন। শাহবাগ মোড় থেকে গেইটগুলোর হাঁটাপথে দূরত্ব ৫ থেকে ৭ মিনিট মাত্র।
৪. বাসসহ অন্যান্য যানবাহন পার্কিং করার ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা গ্রহণ করুন। যানবাহন থেকে উঠা-নামার জন্যও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নিতে পারেন।
৫. ফিরতি সুবিধার কথা চিন্তা করে বাস থেকে নামার আগেই ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করুন। প্রয়োজনে ড্রাইভারের সাথে আপনাদের যোগাযোগ সহজ হবে। ৬. প্রতিটি ধর্মপ্রদেশের জন্য নির্দিষ্ট রঙের গেইট পাস রয়েছে। আপনার গেইট পাসের রং দেখে নির্ধারিত গেইট দিয়ে আপনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করতে পারবেন। গেইটগুলো নম্বর ও রং দ্বারা চিহ্নিত থাকবে। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকগণ আপনাকে সহায়তা দিবেন।
৭. প্রতিটি গেইটের বাইরে অভ্যর্থনা বুথ থাকবে। প্রয়োজনে আপনারা স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নিতে পারবেন।
৮. নির্ধারিত লাইনে দাঁড়ানোর পর আপনার গেইট পাস চেক করা হবে এবং নিরাপত্তা তল্লাশী সেরে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন।
৯. একবার আপনার গেইট পাস চেক করা হলে দ্বিতীয় বার একই পাস ব্যবহার করা যাবে না। কোন সমস্যা হলে স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে যোগাযোগ করুন।
১০. নিরাপত্তার কারণে ও তল্লাশীতে বিলম্ব হওয়ার কারণে, অতি জরুরী প্রয়োজনীয় দ্রব্য ব্যতীত অন্য সবরকম দ্রব্য সাথে করে আনা থেকে বিরত থাকবেন; কোন ধরনের খাবার, পানির বোতল, যে কোন ধরনের ধাতব মুদ্রা/পদার্থ ও চাবির রিং সঙ্গে আনা যাবে না।
১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভিতর খাবারের বুথ থাকবে যেখান থেকে আপনি পানি, চিপস, বিস্কুট জাতীয় জিনিস কিনে খেতে পারবেন। তবে দয়া করে পানির বোতল, বিস্কুটের ও চিপসের প্যাকেট নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলবেন।
১২. ধর্মপ্রদেশের সমন্বয়কারীর মাধ্যমে দুপুরের খাবারের প্যাকেটের জন্য পূর্ব থেকে মূল্য পরিশোধে যারা তালিকাভুক্ত হবেন, শুধু তারাই ব্যবস্থাকৃত বুথ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
১৩. উদ্যানে খ্রিস্টযাগের নির্দিষ্ট স্থান পবিত্র ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অনুরোধ করছি।
১৪. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বেচ্ছাসেবক বুথ ও মেডিক্যাল বুথ থাকবে।
১৫. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে টয়লেটের সুবন্দোবস্থ থাকবে।
১৬. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য গেইট খোলা হবে সকাল ৬:০০ ঘটিকায়। সকাল ৬:০০ ঘটিকা থেকে ৯:০০ ঘটিকা পর্যন্ত আপনি নির্ধারিত গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
১৭. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসনের ব্যবস্থা ব্লক সিষ্টেমে করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকগণ আপনাদের বসতে সহায়তা করবেন।
১৮. অসুস্থ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও প্রতিবন্ধী তীর্থযাত্রীরা যানবাহনের মাধ্যমে প্রবেশ গেইটের কাছাকাছি পৌঁছতে পারবেন। তবে পূর্ব থেকেই ধর্মপ্রদেশীয় সমন্বয়কারীর মধ্যস্থতায় ঐ ধরনের যাত্রী ও তাদের বহনকারী নির্দিষ্ট যানবাহনের তথ্য জানাতে হবে।
১৯. অসুস্থ, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিদেশী অতিথিদের বসার জন্য চেয়ারের সুব্যবস্থা আছে। অন্যান্য সবার বসার জন্য চাটাই ও চটের ব্যবস্থা থাকবে।
২০. পোপ মহোদয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবেন সকাল ৯:৩০ ঘটিকায়। একটা খোলা জীপে পোপ মহোদয় অংশগ্রহণকারীদের মাঝখান দিয়ে ঘুরে যাবেন। এর ফলে সকলেই পোপ মহোদয়কে কাছে থেকে দেখার সুযোগ পাবেন।
২১. মহাখ্রিস্টযাগ শুরু হবে সকাল ১০ ঘটিকায়। এই খ্রিস্টযাগে ১৬ জন ডিকনকে পোপ মহোদয় যাজকরূপে অভিষিক্ত করবেন।
২২. খ্রিস্টযাগে খ্রিস্টপ্রসাদ বিতরণের জন্য প্রতিটি ব্লকে কম্যূনিয়ন বিতরণকারী যাবেন। আপনার নিকটবর্তী কম্যূনিয়ন বিতরণকারীর কাছ থেকে আপনি পবিত্র কম্যূনিয়ন গ্রহণ করতে পারবেন।
২৩. খ্রিস্টযাগের আগে, খ্রিস্টযাগ চলাকালীন এবং খ্রিস্টযাগ শেষে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ঘোষণা দেওয়া হবে। ঘোষণাসমূহ মনোযোগ দিয়ে শুনে তা পালন করার জন্য অনুরোধ করছি।
২৪. খ্রিস্টযাগ শেষ হবার পর পোপ মহোদয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত আপনারা বসে থাকবেন। উদ্যান ত্যাগ করার ঘোষণার পর আপনারা উদ্যান ত্যাগ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নিতে পারবেন।
২৫. খ্রিস্টযাগের পরে যারা রমনা ক্যাথিড্রাল ও রমনা চত্বরে অনুষ্ঠিতব্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমান্ডলিক সুধী সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন তারা স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দিষ্ট গেইট পাস প্রদর্শন সাপেক্ষে ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট দিয়ে বের হয়ে সরাসরি হেঁটেও রমনা আর্চবিশপ হাউজে যেতে পারবেন।
(খ) রমনা ক্যাথিড্রালের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সমাবেশ ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠান
১. নিমন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট অংশগ্রহণকারীরা সুনির্দিষ্ট রঙের গেট পাস দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। বিকেল ১:০০ টা হতে ২:৪৫ টা পর্যন্ত গেইট খোলা থাকবে।
২. বিকাল ৩:০০ টা থেকে প্রার্থনা অনুষ্ঠান শুরু হবে। এ সময় মহামান্য কার্ডিনাল জর্জ এ্যালেনচ্যারী সহভাগিতা করবেন।
৩. ক্যাথিড্রালের অনুষ্ঠানের শেষে যাদের রমনা মাঠে আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমান্ডলিক অনুষ্ঠানে যোগদান করার কথা, শুধুমাত্র তারা চ্যাপেলের পাশের রাস্তা দিয়ে নির্দিষ্ট রঙের গেইট পাস দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
৪. ভ্যানিটি ব্যাগ, কোন ধরনের খাবার, পানির বোতল, যে কোন ধরনের ধাতব মুদ্রা/পদার্থ ও চাবির রিং সঙ্গে আনতে পারবেন না। মোবাইল ফোন সঙ্গে আনা যাবে না।
(গ) আর্চবিশপ হাউস মাঠে শান্তির জন্যে আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমান্ডলিক সুধী সমাবেশ
১. নিমন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট অংশগ্রহণকারীরা সুনির্দিষ্ট রঙের গেইট পাস দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। গেইট খোলা থাকবে বিকেল ১:০০ টা হতে ৩:৩০ টা পর্যন্ত।
২. বিকেল ৩:০০ টা হতে বিভিন্ন ধর্মপ্রদেশের প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন কৃষ্টির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলতে থাকবে।
৩. অনুষ্ঠানস্থলে বসার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের (যেমন-বিদেশী অতিথিবৃন্দ, কার্ডিনাল ও বিশপগণ, বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি, সরকারী উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, ইত্যাদি) ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন স্থান নির্দিষ্ট করা থাকবে। অভ্যর্থনা ও স্বেচ্ছাসেবী কমিটির ভাইবোনেরা এই ব্যাপারে সহায়তা করবেন।
৪. অনুষ্ঠানস্থলে ভ্যানিটি ব্যাগ, কোন ধরনের খাবার, পানির বোতল, যে কোন ধরনের ধাতব মুদ্রা/পদার্থ ও চাবির রিং সঙ্গে আনতে পারবেন না। মোবাইল ফোন সঙ্গে আনা যাবে না
৫. অনুষ্ঠানের শেষে সবার জন্য হাল্কা জলযোগের (প্যাকেটের) ব্যবস্থা থাকবে।
৬. পোপ মহোদয় অনুষ্ঠানের স্থান ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত আপনারা বসে থাকবেন। ঘোষণার পর আপনারা অনুষ্ঠানের স্থান ত্যাগ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নিতে পারবেন।
(ঘ) তেজগাঁও গির্জা প্রাঙ্গণে যাজক, সন্ন্যাসব্রতী, সেমিনারীয়ান ও নবিসদের সমাবেশ
১. অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের সময় সকাল ৮:০০ টা হতে ৯:৩০ টার মধ্যে। গেইট বন্ধ হবে ৯:৪৫ টায়।
২. প্রবেশ করার সময় নির্দিষ্ট রঙের গেইট পাস অবশ্যই দেখাতে হবে। গেইট পাস সকলের জন্যই প্রযোজ্য এবং গেইট পাস হস্তান্তরযোগ্য নয়।
৩. যাজকদের ক্যাসক ও সন্ন্যাসব্রতীদের ধর্মসংঘের নির্ধারিত পোষাক পরিধান করতে হবে।
৪. নবিসদের শাড়ী ও সেমিনারীয়ানদের সম্ভব হলে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিধান করতে বলা হচ্ছে।
৫. সকাল ১০:০০ টায় প্রার্থনা অনুষ্ঠান শুরু হবে। এ সময় মহামান্য কার্ডিনাল টেলেস্পর টপ্প সহভাগিতা করবেন।
৬. কোন ব্যাগ, কোন ধরনের খাবার, পানির বোতল, যে কোন ধরনের ধাতব মুদ্রা/পদার্থ ও চাবির রিং সঙ্গে আনতে পারবেন না। মোবাইল ফোন সঙ্গে আনা যাবে না।
৭. পোপ মহোদয় তেজগাঁও গির্জা প্রাঙ্গণ ত্যাগ না করা পর্যন্ত সকলকে গির্জায় অবস্থান করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
(ঙ) নটর ডেম কলেজে যুব সমাবেশ
১. অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকাল ৩:২০ মিনিটে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে দুপুর ১২:০০ টা হতে দুপুর ২:০০ টার মধ্যে।
২. প্রবেশ করার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র ও নির্দিষ্ট রঙের গেইট পাস অবশ্যই দেখাতে হবে। গেইট পাস সকলের জন্যই প্রযোজ্য এবং গেইট পাস হস্তান্তরযোগ্য নয়।
৩. কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীরা যাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম আছে, তারা তা পরিধান করে আসবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অন্যান্য যুবক-যুবতীদের মার্জিত পোশাক পরিধান করতে হবে। শিক্ষকদেরকে পরিচয়পত্র সাথে করে আনতে হবে।
৪. কোন ধরনের ব্যাগ, খাবার, পানির বোতল, যে কোন ধরনের ধাতব মুদ্রা/পদার্থ ও চাবির রিং সঙ্গে আনতে পারবেন না। মোবাইল ফোন সঙ্গে আনা যাবে না।
৫. পোপ মহোদয় অনুষ্ঠানস্থলে আসার এক ঘন্টা আগে থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলতে থাকবে, যেখানে মহামান্য কার্ডিনাল ওসয়াল্ড গ্রাসিয়েস সহভাগিতা করবেন।
৬. অনুষ্ঠানস্থলের পাশে খাবারের বুথ থাকবে, যেখান থেকে শুকনা খাবার ও পানি সুলভ মূল্যে কেনা যাবে।
৭.অংশগ্রহণকারীদের বসার জন্যে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আসন সুনির্দিষ্ট করা থাকবে। স্বেচ্ছাসেবীগণ এই বিষয়ে সহায়তা করবেন।
৮. পোপ মহোদয় অনুষ্ঠানের স্থান ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত আপনারা বসে থাকবেন।
ঘোষণার পর আপনারা অনুষ্ঠানের স্থান ত্যাগ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নিতে পারবেন।
কার্যনির্বাহী কমিটি
পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর ২০১৭
সূত্র: িি.িঢ়ড়ঢ়বনফ.রহভড়