শ্রদ্ধা ব্যতিরেকে মুক্তিলাভ কি সম্ভব?
বুদ্ধ তথাগত সপ্ত আর্যধনের মধ্যে শ্রদ্ধাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। শ্রদ্ধাই মানব জীবনের পরম সম্পদ। তবে বৌদ্ধ দর্শনে অন্ধ বিশ্বাসের স্থান নেই। যুক্তি সংগত ভাবে বিশ্বাস করাই প্রকৃত শ্রদ্ধা। চিত্তের নির্মলতা, কার্পণ্য ময়লা ত্যাগ, সদ্ধর্ম শ্রবেণেচ্ছা, বুদ্ধাদি সৎপুরুষের দর্শনেচ্ছা শ্রদ্ধার লক্ষণ। স্বচ্ছ সলিলে যেমন চন্দ্র- সূর্যের স্বরূপ প্রতিফলিত হয় তেমনি শ্রদ্ধা প্রযুক্ত চিত্তেই কর্ম-কর্মফল ও বুদ্ধাদি শ্রদ্ধেয় বস্তু গৃহীত হয়, পঞ্চ নীবরণ দূরীভূত হয়। চিতের প্রসারতা ও প্রজ্ঞা বৃদ্ধি করে। ভব সমুদ্র পার হবার একমাত্র সেতু শ্রদ্ধা। এই শ্রদ্ধা একদিকে যেমন মানব জীবনের প্রধান সম্পদ, অন্যদিকে তেমন জীবন ুউত্তরণের পাথেয়। আবার এই শ্রদ্ধা হস্ত, বিত্ত ও বীজ সদৃশ। হস্তহীন ব্যক্তি যেমন মণি-মাণিক্যাদি দর্শন করলেও তা গ্রহণ করতে পারে না, বিত্তহীন যেমন পার্থিক সুখ ভোগ থেকে বঞ্চিত, বীজহীন যেমন ফসল লাভ করতে অক্ষম তেমনি শ্রদ্ধা না থাকলে দানাদি কোন কুশল কর্মই করতে পারে না। সুতরাং শ্রদ্ধাই সমস্ত কুশল কর্মের আদিভূমি। শ্রদ্ধা বাজারের বেচা- কেনার জিনিস নয়। উহা আপন চিত্তে বিবেক দিয়ে ক্রমে ক্রমে সৃষ্টি করতে হয়।