রাজনীতির কারণেই ‘জয় বাংলা’ বিতর্কিত
আফসান চৌধুরী
‘জয় বাংলা’কে জাতীয় সেøাগান করতে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। অর্থাৎ এটাকে জাতীয়করণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সংবিধানে নিশ্চয়ই জাতীয় সেøাগানের ধারা আছে বলেই হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের আগে জয় বাংলা স্লোগান এ দেশের প্রায় সবাই দিত। তখন বাংলাদেশে অন্য কোনো সেøাগান ছিল না। আমাদের দেশে রাজনীতির কারণে এটা পরিবর্তন হয়েছে। জিয়াউর রহমান যখন ক্ষতায় এসেছেন, তখন সেøাগান ছিল ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’। সেনাবাহিনীর যারাই ক্ষমতায় এসেছে, জিয়াউর রহমান বা এরশাদ বলেন তারা পূর্বের সরকার থেকে সংবিধানকে ব্যবধান করার চেষ্টা করেছেন। বিএনপি যখন বেগম জিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, তখনও তারা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছে। এখনও তারা এটাই বলে। এখন হাইকোর্ট জয় বাংলাকে জাতীয় সেøাগান করার যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটা করার কারণ কি অন্য সেøাগানগুলো দেওয়া যাবে না? তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ জয় বাংলা বলেছিল। এটা জাতীয় সেøাগান হতেই পারে। এটা নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করতে হবে না। এ দেশের রাজনীতির কারণে জয় বাংলা বিতর্কিত। বাংলাদেশের মানুষ জয় বাংলাকে প্রাণে ধারণ করেই যুদ্ধ করেছে। জয় বাংলা সেøাগান দিয়ে মানুষ পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে। বাংলাদেশে একটা সমস্যা হচ্ছে রাজনীতি। একদল যেটা করবে অন্যদল এসে সেটার উল্টোটা করবে। কেউ কারওটা মেনে নেয় না। এখন জয় বাংলা মানুষ কখন গ্রহণ করবে, এটা মানুষ বলতে পারবে। হাইকোর্ট বা বাংলাদেশ সরকার হলো যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের প্রতিষ্ঠান। জাতীয় পর্যায়ে যারা আছেন তারা যেটা বলবে সেটাই ঠিক। তবে আমাদের দেশে জনগণ যেটা বলে সেটা কখনো বাস্তবায়ন হয় না। এর কারণ হচ্ছে, ফরমাল আর ইনফরমাল। এটা করলে মানুষ কী বলবে? এটা ফরমাল কিনা এটা চিন্তা করতে হয়। এখন জয় বাংলা যদি সংবিধানে বৈধ হয় তাহলে আর কোনো কথা নেই। এটা আমাদের প্রথম সেøাগান এবং এটা জাতীয় সেøাগান হিসেবে অন্য সেøাগানগুলো থেকে বেশি দাবি রাখে।
পরিচিতি : গবেষক ও সিনিয়র সাংবাদিক
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন