প্রাণের শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ এবং কিছু কথা
শাহরিয়ার কবির
‘জয় বাংলা’ আমাদের জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণার দাবি ছিল অনেক আগে থেকেই। এটা এ দেশের মানুষের প্রাণের দাবি। জয় বাংলা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি। হাইকোর্টের আদেশ বা রায় দিয়ে তো মানুষকে ভালোবাসা শেখানো যায় না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যে এদেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে না, এটা কেন হাইকোর্ট দেখছেন না। হাইকোর্ট কেন বলেন না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধানটি পুনঃস্থাপন করো। সংবিধানে এখনো মৌলবাদী সম্প্রদায়িক উপাদান রয়েছে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রয়েছে। এটা তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়। এটা খুবই বাড়াবাড়ি মনে হয় আমার কাছে। জয় বাংলা কেন হাইকোর্টের রায় দিয়ে জাতীয় সেøাগান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে? একাত্তরে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেটা তো হাইকোর্টের রায়ে বা নির্দেশে করিনি।
উচ্চতর আদালতের দায়িত্ব হচ্ছে সংবিধানকে রক্ষা করা, সংবিধানের যেন কোনো হানি না হয়। সুপ্রিম কোর্টকে আমরা বারবার বলেছি জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সংবিধানে যতগুলো সংশোধনী এনেছিলেন সবই অবৈধ। কারণ জিয়াউর রহমান, এরশাদের সরকার ছিল অবৈধ। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। ধর্মের নামে রাজনীতি চালু করেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধানকে ধ্বংস করার জন্য। এই দেশকে পাকিস্তান বানানোর জন্যই জিয়াউর রহমানের এই চেষ্টা ছিল।
পাকিস্তান ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পরাজয় হওয়ার পরে এই দেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। সেই কাজটি জিয়াউর রহমান করেছেন। এই সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়েছিল জিয়াউর রহমান সংবিধানে যা কিছু করেছে সবকিছুই অবৈধ। তারপরও সরকার এখানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখে দিয়েছে। ধর্মের নামে রাজনীতি রেখে দিয়েছে। যেটা ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল না। সুপ্রিমকোর্টকে আমি বলব, ওই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার জন্য। জয় বাংলা হাইকোর্টের রায়ে মানুষ বলবে না বা সেøাগানও দিবে না। জয় বাংলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের দাবি। জয় বাংলা তো এই দেশের মানুষ বলছেই। যারা বলছে না তারা তো স্বাধীনতা বিরোধী ছিল। জয় বাংলা কোনো দলীয় সেøাগান নয়। এটাকে কখনো আমরা দলীয় সেøাগান বলি না। এগুলো মানুষের মনের ভেতর অটোমেটিক গেঁথে যায়। বাংলার মানুষ দেশকে ভালোবাসতে জানে।
পরিচিতি : সভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : আশিক রহমান