মোহাম্মদ জমির
এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা দিবসে এর সঠিক দিকটি তুলে ধরা। কারণ, আমরা দেখেছি, ১৯৭৫ সালের পরে, প্রায় ২১ বছর এই দেশ স্বাধীনতা বিরোধীরা শাসন করেছিল। তখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা বা প্রক্রিয়াটা ছিল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে যা কিছু করেছিলেন, সব কিছুই সেই ২১ বছরে উলটপালট করা হয়েছিল। পরবর্তিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাগুলোকে জাগ্রত করেছিলেন। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে, পড়াশোনার ক্ষেত্রে, পাঠ্যবইয়ে, সর্বক্ষেত্রেই আমাদের স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেন তরুণ প্রজন্ম জানতে পারে, মুক্তিযুদ্ধে দেশে কি হয়েছিল বা কি হয়নি। এছাড়া যেটা সবচেয়ে বড় বিষয়, সেটা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাদের বিভিন্নভাবে সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়াটি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। আশা করছি, এটা অতি তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ করা হবে। আরও একটি দিক হচ্ছে, বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে যারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন, তাদের স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে তাদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ করা হয়েছে। এই সবই করা হয়েছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য। আর আমরা যারা কূটনীতিক ছিলাম, তারা সবাই চেষ্টা করেছি এই স্বাধীন দেশকে বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করার। আমরা সফলও হয়েছি। আমরা ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি নিয়েছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে তার স্বীকৃতি এনেছি। এই দেশের সংস্কৃতি, এই দেশের বস্ত্রশিল্প, এই দেশের ইতিহাস সবই আমরা বহির্বিশ্বে নিয়ে গিয়েছি। এই দেশ বিজয়ের পরে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেও স্বাধীন দেশেটিকে বর্হিবিশ্বে তুলে ধরেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিরা এই দেশে তখনও সক্রিয় ছিল। তারা ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। যেটা আমাদের দেশের জন্য, জনগণের জন্য, এই দেশের উন্নয়নের জন্য বড় একটি ধাক্কা ছিল। স্বাধীনতা বিরোধীরা এই দেশেটিতে ক্ষমতায় গিয়ে আবার দেশটিকে উল্টোপথে নিয়ে গেল। যা হোক, বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় এসে এগুলোকে ঠিক করলেন। যারা যুদ্ধপরাধী ছিলেন, তাদের বিচার করলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করলেন। এই দেশেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিয়ে আসলেন। আমি আশা করি, এই দেশের জনগণ দেশকে ভালোবেসে, স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে, বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে এভাবে ক্ষমতায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
পরিচিতি : সাবেক কূটনীতিক
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ