সমুদ্রে এক প্রধানমন্ত্রীর হারিয়ে যাওয়ার ৫০ বছর
কামরুল আহসান : ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৬৭ সাল; অস্ট্রেলিয়ার রেডিও- টেলিভিশনে মুহূর্মুহু ঘোষণা হতে লাগলো, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড হল্ট সমুদ্রে হারিয়ে গেছেন। গতকাল ছিলো তার হারিয়ে যাওয়ার ৫০ বছর। আজ পর্যন্ত তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পৃথিবীতে যতোজন বিখ্যাত মানুষের হারিয়ে যাওয়ার কাহিনী সবচেয়ে বেশি পরিচিত তার মধ্যে তিনি একজন। দীর্ঘদিন তার জন্য অপেক্ষা করেছে দেশের মানুষ। চারদিকে খোঁজাখুঁজির কোনো বাকি ছিল না। অনেক দিন আশায় ছিল তার পরিবার, নিশ্চয়ই তিনি একদিন ফিরে আসবেন, ফিরে না আসলেও তার শবদেহটি অন্তত পাওয়া যাবে। না, তার কোনো চিহ্নিই পাওয়া যায়নি কোনোদিন। অবশেষে মাত্র এই ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যু ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু, কী হয়েছিল তার? কীভাবে তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন?
কোনো সন্দেহই বাকি রাখা হয়নি। অনেকের সন্দেহ তিনি আসলে আত্মহত্যা করেছেন। অনেকে বলেছে, না, চাইনিজ সাবমেরিন অপহরণ করেছিল তাকে। অনেকের ধারণা সিআইএ হত্যা করেছে তাকে। আসলে কী হয়েছিল তা জানা যায়নি এতো বছরেও।
মাত্র ২২ মাস তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলেন। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ১৭তম প্রধানমন্ত্রী। তাকে বলা হয় অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আধুনিক প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।
হারিয়ে যাওয়ার সময় তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। ১৯০৮ সালে জন্মেছিলেন তিনি। মেলবোর্নের পোর্ট সি শেভিওট সৈকতে যেদিন তিনি স্নান করতে গিয়েছিলেন সেদিন তার সঙ্গে ছিল তার তিন শ্যালিকা। এক সময় তিনি একাই সাগরে নেমে গভীর সাগেরর দিকে সাঁতরে যেতে লাগলেন। কেউ একজন তাকে সাবধান করে বলেছিল, আর দূরে যাবেন না। তিনি বলেছিলেন, এই সমুদ্র সৈকত আমি আমার হাতের তালুর মতোই চিনি। সেদিন ছিল বড় বড় ঢেউ, জোয়ার এসে পড়ছিল। হঠাৎ তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন। সিএনএন : সম্পাদনা : পরাগ মাঝি