নুর উদ্দিন, ছাতক (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের দিরাই পৌর শহরে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত সুমাইয়া আক্তার মুন্নি দিরাই উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। গতকাল সোমবার নিহত স্কুলছাত্রীর মা রাহেলা বেগম ২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এরমধ্যে তানবির চৌধুরী নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনার মূলহোতা ইয়াহিয়া সর্দারকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।
নিহত সুমাইয়া আক্তার মুন্নী দিরাই উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তার বাবা হিফজুর রহমান ইতালিতে থাকেন। তাদের বাড়ি দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের নগদীপুর গ্রামে। দিরাই পৌর শহরের আনোয়ারপুর নয়া হাটির মাদানী মহল্লা এলাকায় নানার বাসার ২য় তলায় থাকেন হিফজুর রহমানের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ৮টার দিকে দিরাই পৌরসভার মাদানী মহল্লায় বাসার দ্বিতীয় তলায় মুন্নির পড়ার কক্ষে প্রবেশ করে ছুরিকাঘাত করে করে উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর গ্রামের জামাল সর্দারের ছেলে ইয়াহিয়া সর্দার (২২) নামের এক যুবক। এসময় মুন্নির চিৎকার শুনে পাশের কক্ষ থেকে তার মা রাহেলা খাতুন মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়।
নিহত মুন্নীর মা রাহেলা বেগম বলেন, সামনের বছর এসএসসি পরীক্ষা ভালো করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল আমার মেয়ে মুন্নী। তাই ভালোভাবে লেখাপড়া করানোর জন্য গ্রামের বাড়ি ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে আমি দিরাইয়ে আমার বাবার বাড়িতে থাকছি, কিন্তু বখাটে ইয়াহিয়া বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে এমনকি বাসার সামনে এসে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করছিল। আমি ইতোপূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকটও বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি, কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
দিরাই থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, মুন্নী খুনের ঘটনায় ২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূল আসামি ইয়াহিয়াকে গ্রেফতারে পুলিশি চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ্ খান বললেন, মুন্নীর পেটে ও বুকের বামপাশে আঘাত রয়েছে। মূল আসামি ইয়াহিয়াকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন পূর্বে মুন্নীর মা ইয়াহিয়া বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ র্যাব অফিসে একটি অভিযোগ করেছিলেন। র্যাব কার্যালয়ে ইয়াহিয়াকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুচলেখা নিয়ে তা সমাধান করে দেওয়া হয়েছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।