প্রিয়াংকা পান্ডে : মিয়ানমারে মুসলমান সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন দেশটির নেত্রী অং সান সু’চির অনুমোদনেই হয়েছে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার যেইদ রাদ আল হুসেইন। এজন্য মিয়ানমারের নেতাদের একসময় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি বলছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার হাই কমিশনার জেইদ বলেন, কোনদিন কোন আদালত যদি ‘গণহত্যার’ দায়ে মিয়ানমারকে অভিযুক্ত করে তবে তিনি অবাক হবেন না। গতকাল সোমবার এক টিভি সাক্ষাতকারে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর সংঘটিত বর্বর হত্যাকা-ের সমালোচনা করে এ কথা বলেন জেইদ। জেইদ আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন পূর্ব পরিকল্পনার ফল।’
যদিও মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা সম্পর্কিত সকল নৃশংসতাকে অস্বীকার করেছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মতে, রাখাইন অঞ্চলে শুধুমাত্র বিদ্রোহদমন অভিযান চলেছে, কোন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৪০টিরও বেশি রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। সম্প্রতি স্যাটেলাইট থেকে সংগৃহীত ছবি বিশ্লেষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে এইচআরডব্লিউ। ২৫ আগস্টের পর রাখাইনে এ নিয়ে ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম থেকেই নির্যাতন থেকে বাচাঁর জন্য হাজার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ(এইচআরডব্লিউ) জানায়, ‘স্যাটেলাইট ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে, এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে, যখন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার।’
চলতি বছরের ২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমারে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর নির্মম নির্যাতনের ফলে সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি শরনার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের এই বর্বরতাকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। রয়টার্স/বিবিসি।