দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতন, কারণ ও তার প্রতিকার ওমর ফারুক খন্দকার
আজ নির্যাতনের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে বিশ্ব মুসলিম সর্বত্র নিষ্পেষিত। পদে পদে লাঞ্চিত ও অপমানিত। জোটবদ্ধ কুফরী শক্তি ইসলাম ও মুসলিম নিধনের ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পৃথিবীর বুকে ইসলাম নামের বৃক্ষটি তার শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে জীবন্ত থাকাকে আদৌ তারা মেনে নিতে পারে না তাই প্রতিনিয়ত তার শাসরুদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ হীনস্বার্থ হাসিলের লক্ষে তারা একে চলছে, কুটিল ষড়যন্ত্রের নীল নক্শা। ইসলামের হাটি হাটি পা পা কালে (শুরু লগ্নে) প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর যুগে মক্কার মুশরিকরা এর চেয়েও অমানুষিক নির্যাতন মুসলমানদের উপর চালিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই নির্যাতন নগণ্য বৈ কিছু না। এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদের নির্যাতনের যাতাকলে পিষ্ট হওয়ার পর ঐশী নির্দেশে মুসলমানরা তাদের অত্যাচারের সমুচিত জবাব দিয়েছেন। যার উপমা বহন করে বদর, উহুদ, খন্দক ও মক্কা বিজয়ের ইতিহাস। কুফরি শক্তি কর্তৃক নির্যাতনের ধারাবাহিকতা সর্বদা বিদ্যমান ছিল। কিন্তু এই জুলুমকে দূর হস্তে রুখে দিয়েছিল মজলুম মানবতার মুক্তির দূত প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর আদর্শের অকোতভয় সৈনিক, কুফরী শক্তি নিধনের যমদূত খালিদ বিন ওয়ালিদ, মুসা বিন নসাইর, তাকের বিন যিয়াদ, মুহাম্মদ বিন কাসেম, নুরুদ্দিন জঙ্গি, সালহ উদ্দিন আইয়ূবী, সুলতান মাহমুদ গজনবী ও এখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির মত বীর সেনাদের দল। ঈমানী শক্তির তুলনায় কুফরী শক্তি এমন এক পরাজিত শক্তি যা মুসলমানদের সম্মুখে খড়-কুটা ও কচুর পাতায় জমাট পানি তুল্য। হে বীর! মুসলিম জাতি। এসো লাঞ্চনাময় জীবন যাপন থেকে নিজেকে বের করে ইহকালীন শক্তি ও পরকালীন মুক্তির পাথেয় হিসাবে গ্রহণ করি রাসূল (সা:) এর জীবন আদর্শ। আজ যদি আমরা রাসূলের আদর্শের বিরুদ্ধাচারণ করি, তাহলে আমাদেরকেও লাঞ্চনা আর অপমানের শিকার হতে হবে। যার চাক্ষুস প্রমাণ কাশ্মীর, মায়ানমারের আরাকান রাজ্য অনুরূপ ফিলিস্তীন তথায় মুসলমানের রক্তের ভলিখেলা চলছে, তাদের ইজ্জত ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে, মা-বোন ও শিশুদের আত্মচিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে আছে, অপমান ও লাঞ্চনার তীরের বেগ এমন যে, ফিলিস্তীনের জেরুজালেমে মুসলমানদের প্রথম কেবলা সহ¯্র নবীদের মাতৃভূমী বাইতুল মুক্বাদ্দাসকেও তারা ছিনিয়ে নিয়েছে। কিন্তু দুখ: জনক হলেও সত্য, এই লাখো লাখো মা-বোনের আত্মচিৎকারের সমুচিৎ উত্তর দেয়ার নিমিত্তে একজন হাজ্জাজ বিন ইউসূফ নেই, নেই একজন মুহাম্মদ বিন কাসেম। অথচ এই হাজ্জাজ বিন ইউসূফ ও মুহাম্মদ বিন কাসেম উপমহাদেশের এক মুসলিম রমনীর আত্মচিৎকারে গর্জে উঠে উপমহাদেশকেই স্বাধীন করে নিয়েছে। নেই দিক বিজয়ী সালাহ উদ্দিন আইয়ূবীর মত একজন মুজাহিদ যে, মুসলমানদের নয়ন মনী বাইতুল মুক্কাদ্দাসকে পূর্ণরুদ্ধার করে তাদের হাতে ন্যাস্ত করবে। হায়! ধিক্কার। বিশ্ব মুসলিম নির্যাতিত, নির্যাতনের ইষ্টিম রোলারে পিষ্ট, মুক্তি পেতে চাই, আমরা পেতে চাই মুক্তি এ জুলুমের পিষ্টতা থেকে, ফিরে পেতে চাই, ফিরে যেতে চাই খেলাফতে রাশেদার সোনালী যুগে। হে আল্লাহ! মোদের দিন দাও ফিরিয়ে। আমীন!
লেখক: কলামিস্ট ও গবেষক