মামুন আহম্মেদ খান : ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (বর্তমানে ওএসডি) সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরী।
গতকাল আসামিরা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় মামলার প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আসামি সুভাষ চন্দ্র সাহা পূর্বপুরুষ থেকে সম্পদশালী। তার আয় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত কিনা তা এনবিআরের বিষয়। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের সকল আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি পিপিএম সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তিনি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার। আপিল বিভাগ এই মর্মে সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন যে, পৃথক আয়কর দাতার ক্ষেত্রে পৃথক সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি না করে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বা সহযোগিতার অভিযোগে দায়ী করা যাবে না। এমনকি আয়কর বিভাগ বা সরকারের অন্য কোনো বিভাগ কর্তৃক যদি পরিমাপ বা হিসাব গৃহীত হয় তবে সরকারের অন্য কোনো বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। সুতরাং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের আলোকে আসামিদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা কর্তৃত্ব বহির্ভূত।
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জুয়েল জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, আসামি সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তাদের যৌথ নামে মোট ১৯টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত সুদসহ মোট ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা স্থিতি পাওয়া যায়। তাদের যৌথনামীয় ওই পরিমাণ এফডিআর এর মধ্যে ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত অর্জিত এফডিআরসমূহের স্থিতি ও তা অর্জনের উৎসের বিষয়টি ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ তিনি পুলিশ বিভাগে চাকরিকালে বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে ওই অর্থ অর্জন করেছেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।