অর্থমন্ত্রী সবই জানেন
রাজেকুজ্জামান রতন
চালের দাম বাড়–ক, এটা সরকারই চেয়েছে। যাতে কৃষকেরা লাভবান হতে পারে। এমন কথা অর্থমন্ত্রীর। অর্থমন্ত্রীর এই কথায় আমরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। কেননা, চালের দাম বাড়লে কৃষক তো লাভবান হবে না। কৃষক তো চাল বিক্রি করে না। কৃষক বিক্রি করে ধান। চালের দাম বাড়িয়ে লাভবান হবে ব্যবসায়ীগণ। মধ্যসত্ত্ব ভোগকারীর দল। সরকারি ক্রয় মূল্যের কেন্দ্রে এসে ধান বিক্রি করাটা কৃষকের জন্য দুরূহ হয়ে যায়। তাই সরকার নির্ধারিত মূল্যের নিচেই কৃষককে ধান বিক্রি করতে হয়। আবার কৃষক যখন চাল কিনে খান, তখন সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে তাকে চাল কিনে খেতে হয়। যে কারণে গত বছর সরকার চালের দাম নির্ধারণ করেছিল ৩৪ টাকা কিন্তু বাজারে ৫০ টাকা মূল্যে চাল বিক্রি হয়েছে। আর সরকার যে ধানের দাম নির্ধারণ করেছিল ৯২০ টাকা, কৃষককে তার চেয়ে কম মূল্যে ধান বিক্রয় করতে হয়েছে। ফলে কৃষক যখন চাল কিনতে গেছে, যখন তার মৌসুম শেষ হয়েছে, তখন চাল কিনে খেতে গিয়ে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। এটা তো অর্থমন্ত্রীর জানার কথা। পত্র পত্রিকায় এ বিষয়গুলো বহুবার এসেছে যে, কৃষকেরা ধান উৎপাদন করে ধানের ন্যায্য মূল্য পায় না আর ভোক্তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল পায় না। মাঝখান থেকে মুনাফাটা চলে যায় চাল ব্যবসায়ীদের হাতেই। এই বিষয়টা অর্থমন্ত্রীর জানার কথা। তারপরও বিষয়কে আড়াল করার অপূর্ব দক্ষতা তাদের আছে। যুক্তিকে বিভ্রান্ত করারও দারুণ ক্ষমতা তাদের আছে। যুক্তির মারপ্যাচের যে দূর্ভোগটা তৈরি হয়, পুরোটাই বাংলাদেশের জনগণ ভোগ করে।
পরিচিতি : কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, বাসদ
মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ