ওলিউল্লাহ নোমান
সৌদি আরবে এক সপ্তাহের বেশি তার সাথে ছিলাম। দেখেছি তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা। রাস্তায় বের হলে, মসজিদে নববীতে, মসজিদে কোবা যেখানেই গেছেন বাংলাদেশীরা তাকে দেখে দৌঁড়ে কাছে এসেছেন। জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেছেন তার সাথে। সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের দেখেছি আবেগে আপ্লুত হয়ে চোখের পানি ছাড়তে। অনেকেই বলেছেন, স্যার মক্কায় মসজিদে হারাম ও মদীনায় মসজিদে নববীতে সব সময় আপনার জন্য দোয়া করেছি। তাদের আবেগ দেখলেই বোঝা যায় নিখাঁদ এই ভালোবাসা। কোন প্রাপ্তির প্রত্যাশায় নয়। দেশপ্রেমিক মজলুমের প্রতি নিরঙ্কুশ এই ভালোবাসা।
কোনো অনুরোধই কাজে আসল না। অদম্য তিনি। সবাইকে তার কাছে হার মানতে হল। সবার অনুরোধ ছিল তিনি যেন এই মুহূর্তে দেশে না ফিরেন। কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাবও ছিল। সৌদি আরবে কিছুদিন অবস্থান করা, নতুবা সিঙ্গাপুরে ফিরে গিয়ে সেখানে বিশ্রাম করা অথবা তুরস্কে সফর করা। এসব বিকল্প অনুসরনের মাধ্যমে অন্তত পুরো চিকিৎসা শেষ করে দেশে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছিলেন শুভাকাঙ্খীরা। দেশ থেকে ফোনেও অনেকে একই অনুরোধ জানিয়েছেন। সৌদি আরবে দেখেছি অনেকেই দেখা করে তাকে অনুরোধ করছেন। সবার কথা একটাই। অন্তত চিকিৎসা পুরোপুরি শেষ করে দেশে ফিরে যাওয়া ঠিক হবে না। ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী ফলোআপ চিকিৎসা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হওয়ার কথা। সেই পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করে শরীরকে কিছুটা বিশ্রাম দেন।
তার সাফ জবাব দেশে ফিরবই। দেশে ফিরেই সব মোকাবেলা করব। নতুবা মানুষের মনে ধারণা তৈরি হবে মাহমুদুর রহমান দেশ থেকে পালিয়ে রয়েছেন। এই ধারণা তৈরি হতে দেওয়া যাবে না। সবার অনুরোধের জবাবে তিনি একটা কথাই বলেন। পুরো দেশটাই এখন একটি বৃহত্তর কারাগার। যেখানে আওয়ামী লীগের অতি ঘনিষ্ঠজন ছাড়া সবাই কারাবাস করছেন। কথা বলার অধিকার নেই। লেখার সুযোগ নেই। বৃহত্তর এই কারাগারে ১৬ কোটি মানুষের সঙ্গেই থাকব। সরকার বড়জোড় বৃহত্তর কারাগার থেকে ক্ষুদ্র জেলে নেবে। রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করবে। রিমান্ডে নির্যাতনে মৃত্যুর মুখ থেকে আল্লাহ ফিরিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং বিদেশে থাকা যাবে না। যত নির্যাতন নিপীড়ন হোক সেটা মানুষের মাঝে থেকে সহ্য করতে হবে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই করতে হবে। লড়াই ছাড়া এই জাতির মুক্তি মিলবে না। বলা যায়, লড়াই করার অদম্য ইচ্ছা নিয়েই তাঁর দেশে ফেরা। ফেসবুক থেকে
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন