খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ
শরীফা খাতুন শিউলী, খুলনা থেকে : বকেয়া মজুরির দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি পাটকলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে ফের কর্মবিরতি পালন করছেন। গতকাল শনিবার ভোর ৬টায় এসব পাটকলের শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে ২য় দিনের কর্মবিরতি শুরু করে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্লাটিনাম, দৌলতপুর, ক্রিসেন্ট, স্টার, ইস্টার্ণ, জেজেআই ও আলীম- মোট ৭টি জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। সেদিন চলেছে কার্পেটিং এবং খালিশপুর জুট মিল। তবে আজ শনিবার ভোরে কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলেও খালিশপুর জুট মিলের কোনো শ্রমিক উৎপাদন কাজে যোগ দেয়নি। ফলে বর্তমানে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের মধ্যে ৮টিরই উৎপাদন কাজ বন্ধ রয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ৮ সপ্তাহের মজুরির দাবিতে শ্রমিকরা প্লাটিনাম জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় ক্রিসেন্ট, দৌলতপুর ও স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। এ ৪টি মিল বন্ধের সংবাদ পেয়ে দুপুর ২টার দিকে আটরা-গিলাতলা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ন এবং যশোর অভয়নগরের ‘জে জে আই’ জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলীম জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আর আজ খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
পাটকল সূত্রে জানা যায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের মধ্যে ক্রিসেন্ট জুট মিলে প্রায় ৫ হাজার, প্লাটিনামে সাড়ে ৪ হাজার, স্টারে সাড়ে ৪ হাজার, দৌলতপুর জুট মিলে সাড়ে ৬শ, ইস্টার্নে ২ হাজার, আলীমে দেড় হাজার এবং জেজেআই জুট মিলে ২৬০০ এবং খালিশপুর জুট মিলে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিক রয়েছে। এসব পাটকলের শ্রমিকদের ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে।
প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মো. মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মজুরি না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঘরে চাল-ডাল বাজার নেই। ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে আছে। বাধ্য হয়ে তারা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, শ্রমিকদের ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এমন অবস্থায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার ৭টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আরও একটি বন্ধ করেছে। শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধে মিল কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করছে। দ্রুত শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের দাবি জানান তিনি।
এদিকে প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. শাহজাহান বলেন, উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পারায় সময়মতো মজুরি পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।