ভিক্ষুণী গৌতমী : বুদ্ধের সময় নারীদের সম্মান ও মর্যাদা ছিল। সম্রাট অশোকের মৃত্যুর পর (বুদ্ধের পরিনির্বাণের ২১৮ বছর পরে তাঁর রাজত্বকাল) সমাজে নারীদের এই স্থান পরিবর্থিত হতে থাকে। গ্রিক ও শকদের ভারতবর্ষ আক্রমণের পর থেকে নারীদের সামাজিক গুরুত্ব কমতে থাকে। এমনকি ভিক্ষুণীসঙ্ঘের নিয়ম- কানুন দেখে মনে হয় ভিক্ষুসঙ্ঘ এর অনেক পরিবর্তন সাধন করে বিনয়ে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। মহাপ্রজাবর্তী গৌতমীর জন্য আটটি দয়িত্বপূর্ণ নিয়ম প্রবর্তন করে ভিক্ষুণীসঙ্ঘের যে- উল্লেখ পাওয়া যায় তাতে ভিক্ষুদের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। এই আটটি দায়িত্বপটূর্ণ নিয়ম বুদ্ধ কর্তৃক প্রবর্তিত হয়েছিল কিনা তহা আজ আর জানার উপায় নেই। হয়তো বুদ্ধের পরিনির্বাণের অনেক পরে এই নিয়মগুলো বিনয়ে এবং অঙ্গুত্তর- নিকায়ে প্রবেশ করে। পৃথিবীর সব ধর্মে এমন ঘটেছে। নিয়ম আটটি এই ঃ
১. সঙ্ঘে ভিক্ষুণী যত দীর্ঘকালই থাকুন না কেন, তিনি ছোট-বড় সকল ভিক্ষুকেই প্রমাণ করবেন।
২. যে গ্রামে ভিক্ষু নেই, সেখানে ভিক্ষুণীরা থাকবেন না।
৩. প্রত্যেক পক্ষে উপবাস কোন কোন দিন থাকতে হবে, এবং ধর্মোপদেশ শুনতে কখন আসতে হবে, এই দুটি বিষয়ে ভিক্ষুণীরা ভিক্ষুসঙ্ঘকে জিজ্ঞেস করে নেবেন।
৪. বর্ষাবাসের পর ভিক্ষুনীগণ ভিক্ষুসঙ্ঘ ও ভিক্ষুনীসঙ্ঘের প্রবারণা (নিজের দোষ বলা ও দেখাবার জন্য সঙ্ঘকে অনুরোধ) করবেন।
৫. যেসব ভিক্ষুণীর হাতে ‘সঙ্ঘাদিশেষ আপত্তি’ ঘটেছে, তাঁরা ভিক্ষভুসঙ্ঘ ও ভিক্ষুণীসঙ্ঘের নিকট থেকে ১৫ দিনের জন্য বিহারের বাইরে রাত্রিযাপন করে শান্তি গ্রহণ করবেন।
৬. দুই বছর সঙ্ঘে সাধনা কার পর ভিক্ষুণখেিক উভয় সঙ্ঘই উপসম্পদা দেবেন।
৭. কোনো কারণেই ভ্কিষুনী কোনো ভিক্ষুকে কটু বা মন্দ বাক্য বলতে পারবেন না।
৮. ভিক্ষুণী ভিক্ষুকে উপদেশ দেবেন না, ভিক্ষুই ভিক্ষুনীকে উপদেশ প্রদান করবেন ।