বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট গ্রহণ করলো আপিল বিভাগ
এস এম নূর মোহাম্মদ : নি¤œ আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট গ্রহণ করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল বুধবার শুনানি শেষে দায়িত্বে থাকা প্রধান বিচারপতি মো.আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ওই গেজেট গ্রহণ করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন। আদালত বলেন, সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্ব রেখে যে রুলস করা হয়েছে আপিল বিভাগ তা গ্রহণ করছে। উই এ্যক্সেপ্ট কমপ্লাইনস।
এর আগে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। গতকাল শুনানির শুরুতেই অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আদালত চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত শৃংখলার বিধিমালা গেজেট আকারে জারির নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর সেটা জারি করা হয়েছে। আমাদের আরো একটি আবেদন আছে। ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট এ আদালত যে আদেশ দিয়েছিলেন সেখানে ১১৬ অনুচ্ছেদের রাষ্ট্রপতির বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ ছিল। আমরা সেটা প্রত্যাহার চাচ্ছি।
এসময় আদালত বলেন, সেটা করা যাবে। আগে গেজেটের বিধিগুলো পড়েন। এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বিধিমালা পড়তে গেলে মাসদার হোসেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ডায়াসে দাঁড়ান। তিনি বলেন, বিধিমালা চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ আবেদন করবো। এবিষয়ে আমার একটি লিখিত বক্তব্য রয়েছে। সেটা দেখুন। সেটা নিষ্পত্তি করুন। নিয়ম অনুযায়ী রুলস তৈরি করবে হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর গেজেট জারি হবে।
এসময় আদালত বলেন, আমরাই বলেছি রুলস তৈরি করতে। সে অনুযায়ী এরআগেও রুলস তৈরি করে আপিল বিভাগে সাবমিট করা হয়েছিল। এসময় ব্যারিস্টার আমীর বলেন, এই গেজেট নিয়ে কথা বলতে চাই। ১৩৩ অনুচ্ছেদ অন্য বিভাগের জন্য। আদালত বলেন, অবশ্যই বলবেন। রুলস-এ কি আছে সেটা দেখতে চাই। অন্য কিছু থাকলে তাতো যেকোনো সময় পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে। আমরা দেখবো কন্টেন্টে কি আছে। ব্যারিস্টার আমীর বলেন, এখানে উপযুক্ত কতৃপক্ষ কে?
এরপর আদালক বলেন, প্রেসে বলা হচ্ছে আমাদের কোনো কিছু নেই। সবকিছু দিয়ে দিয়েছি। কোথায় সব দিয়ে দিয়েছি? প্রেসে উল্টাপাল্টা লেখা হচ্ছে। এরপর আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে গেজেট থেকে বিভিন্ন ধারা পড়তে বলেন। আদালতের কথা মতো অ্যাটর্নি জেনারেল বিভিন্ন ধারা পড়তে থাকেন। আদালত বলেন, অনুসন্ধানটা পড়েন। (ছ) পড়েন। এখানে সুপ্রিম কোর্ট ছিলনা, আমরা ঢুকিয়েছি। কোন অনুসন্ধান হবে না সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া। আসলে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া কিছুই করা যাবে না। আর পত্রিকায় লেখা হচ্ছে আমরা সব দিয়ে দিয়েছি।
আদালত বলেন, বিধিমালার ২৯ নম্বর ধারা পড়েন। এটাতো আরো মারাত্মক। সেখানে বলা আছে, কোনো বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ প্রাধান্য পাবে। আসলে কেউ পড়েনা। না পড়ে পত্রিকায় লেখা হয়। তাহলে আমরা ৫ জন যে এগ্রি করলাম। আমরা কি এতই বোকা? আমরা কি নবীশ বিচারক? বলা হচ্ছে আমরা সব শেষ করে ফেলেছি। আমাদের মনে হচ্ছে আগের রুলস্ েসুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ছিল না। এখন সেটা করা হয়েছে। বাইরে বলা হচ্ছে গেল গেল সব গেল। আমরা সব দিয়ে দেইনি। এসময় আদালত ব্যারিস্টার এম আমীরের কাছে জানতে চান তিনি কিছু বলবেন কিনা। জবাবে ব্যারিস্টার আমীর বলেন, সুপ্রিম কোর্ট গেজেট গ্রহণ করার পর আমার আর কিছুই বলার থাকে না। এরপর আদালত আদেশ দেন।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। ওই রায়ের আলোকে নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিলো। গত ১১ ডিসেম্বর সরকার বিধিমালা গেজেট আকারে জারি করে। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন