ইসলামে পর্দার বিধান
মুহাম্মাদ আবু আখতার
আধুনিক যুগের অনেক নামধারী মুসলমান পর্দাবিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে এবং বিভিন্ন কটূক্তি করে ইসলামের পর্দাবিধানের প্রতি বিষোদগার করে। অথচ নারীদের ইজ্জত-সম্মান রক্ষা করতে পর্দার বিকল্প নেই। আল্লাহ তায়ালা পর্দার গুরুত্ব বর্ণনা করে বলেন, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের (জিলবাব হচ্ছে বোরকা জাতীয় পোশাক যা দ্বারা সমগ্র শরীর ঢেকে রাখা যায়) কিছু অংশ নিজেদের (মুখম-লের) ওপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা আহযাব-৫৯)
নারীদের সাধারণ অবস্থায় ঘরের ভিতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেননা ঘরই নারীর আসল কর্মস্থল। তবে কখনো কোন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলে পর্দা করে যেতে হবে। সাজসজ্জা করে নিজের রূপ সৌন্দর্য প্রদর্শন করা যাবে না। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা ঘরের ভিতের অবস্থান করবে। জাহেলী যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।’ (সুরা আহযাব- ৩২)
পর্দার অন্যতম একটি বিধান হচ্ছে গাইরে মাহরাম হতে দৃষ্টির হিফাজত করা। তাই মহান আল্লাহ তায়ালা গায়রে মাহরাম নর-নারীর পরস্পরের প্রতি কুদৃষ্টির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞারোপ করেন। আল্লাহ তায়ালা পুরুষদের ব্যাপারে বলেন, ‘মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা নুর-৩?) নারীদের প্রতি পুরুষের কুদৃষ্টি দেয়া যেমন নিষিদ্ধ? তেমনি পুরুষদের প্রতিও নারীদের কুদৃষ্টি দেয়া নিষিদ্ধ। এছাড়া নারীদের জন্য গাইরে মাহরাম হতে পর্দা করা জরুরী। আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে সুরা নুরের পরবর্তী আয়াতে ইরশাদ করেন, ‘ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের ? সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বুকের উপর ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র,স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা নুর-৩১)
একমাত্র পর্দার হুকুম যথাযথভাবে মেনে চলার মাধ্যমে নারী পুরুষের পরস্পরের প্রতি কুদৃষ্টি, কুচিন্তা ও অবৈধ প্রেমালাপ প্রতিরোধ করা যেতে পারে? আর এভাবেই নারীদের ইজ্জতের পরিপূর্ণ হেফাজত সম্ভব হতে পারে। এছাড়া অন্য কোনো পথে নারীর ইজ্জতের হেফাজত সম্ভব নয়।