নব্বই দশকের পর থেকে ছাত্র রাজনীতিতে এক ধরনের অচলায়তন তৈরি হয়েছে এবং সেই অচলায়তন এখনো জোরালোভাবে বর্তমান আছে। আর এই অচলায়তন থাকার কারণে, ছাত্র রাজনীতির নেত্রীত্বে যারা আছে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সেই অচলায়তন ভাঙতে প্রস্তুত নয়। এ কারণেই গত ২৬ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নতুন কমিটি হচ্ছে না বলে আমি মনে করি। তবে যে কোনো ধরনের অচলায়তন মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে নতুন দিনের সূচনা করার গুনাবলি এবং সামর্থ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বিদ্যমান। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র শিক্ষা, শান্তি এবং প্রগতির কথা বলে। ছাত্রলীগের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক ইমেজ আছে, তাই সকল মানুষের প্রত্যাশা আমাদের প্রতি একটু বেশি। সবসময় বিভিন্ন কারণে আমরা সেটা পুরণ করতে পারি না। সেই কারণে ছাত্রলীগের ইমেজ সংকটের প্রশ্ন আসে। তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর চেয়ে যে কোনো বিষয়ে তুলনামূলকভাবে ছাত্রলীগ যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের পক্ষে থেকে নিজেদের সামর্থ প্রমাণ করে থাকে। তাই আমি মনে করি না যে, সার্বিকভাবে ছাত্রলীগ কোনো ইমেজ সংকটে আছে। হয়তো বিভিন্ন জায়গায় নেতৃত্ব দুর্বলতার কারণে অথবা সংগঠনের আদর্শিক চর্চা না থাকার কারণে বর্তমান পেক্ষাপটে নির্দিষ্ট কিছু কিছু কাজের ক্ষেত্রে বিতর্কিত হচ্ছে। তার মানে এই নয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইমেজ সংকটে আছে। এইতো গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপি ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের গঠনমূলক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। বক্তব্যে তিনি ছাত্রলীগকে দেশ গঠনে সাথে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। যে কারণে প্রথানমন্ত্রী বলেছেন, ডিজিটাল এবং তথ্যপ্রযুক্তির বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার অপরিহার্যতা অপরিসীম, শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই, শিক্ষা ছাড়া সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। সেই সাথে তিনি আরও বলেন, সেই শিক্ষাটা যদি বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা না হয়, তাহলে একবিংশ শতাব্দিতে এসে আমাদের অগ্রযাত্রা অগ্রসর হবে না। তাই তিনি ছাত্রলীগকে বিজ্ঞান ভিত্তিক লেখাপড়ার দিকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ধরনের অচলায়তনকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে প্রস্তুত আছে।
পরিচিতি : যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ