সরকারের কোনো না কোনো এজেন্সির অনুমতি লাগবে
ড. এএসএম আতীকুর রহমান
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তো শীতার্ত মানুষের সহযোগিতামূলক এই ধরনের তাৎক্ষণিক কোনো কর্মসূচি নেই। কারণ, এখানে লক্ষ করতে হবে, শীতার্ত মানুষকে সেবা দেওয়ার কাজটা হলো ত্র্রাণ। ত্রাণ মন্ত্রণালয় কিন্তু আলাদা। আর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যেটা দায়িত্ব সেটা হলো যে, আমরা লক্ষ্য করি ২০ ভাগ লোক সব সময় দুস্থ্য থাকবে, পৃথিবীর সব জায়গাতেই। তারা প্রতিবন্ধি হতে পারে, অনাথ শিশু হতে পারে, প্রবীণ হতে পারে, দুস্থ্য নারী হতে পারে, এদের জন্য যে কর্মসূচি এটা করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। সমাজে যারা অসুবিধাগ্রস্থ মানুষ, তাদের জন্যে তিনটি ব্যবস্থা থাকে। প্রথমটি হলো ইন্সুরেন্স, ২য়টি হলো ত্রাণ, ৩য়টি হলো স্যোসাল অয়েল ফেয়ার। সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এই ধরনের ত্রাণের কোনো কর্মসূচি কিন্তু সরাসরি পালন করে না। তবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের সাথে রেজিষ্ট্রিভুক্ত যে সকল এনজিওগুলো তারা কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে কাজগুলো করে, সেটাও কিন্তু সমাজসেবা অধিদপ্তর বা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটা ক্ষমতার মধ্য দিয়েই করা হয়। আমরা যে প্রবীণদের, শীতার্ত কাপড় দিব এটা কিন্তু আমরা করছি আমাদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যে রেজিষ্ট্রেশন আছে তার ক্ষমতা বলে। আমাদের যে কন্সটিটিউশনের ১৫’র ডি ধারা তে কিন্তু এই ধরনের দুস্থ্য মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কিন্তু একটা অঙ্গিকার অছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, এ রকমভাবে হঠাৎ করে একটা ক্রান্তিকাল হতে পারে।
এটা শীত হতে পারে, নদী ভাঙন হতে পারে, আগুন লেগে যেতে পারে, মহামারির মতো হতে পারে। তাৎক্ষণিক ভাবে যেটা দেওয়া হয়, সেটা হলো ত্রাণ। সেই ত্রাণের জন্য মন্ত্রণালয় কিন্তু আলাদা। এবং দেখা যাচ্ছে দেশের ত্রাণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় দেয় এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি তহবিল আছে, সেখান থেকেও কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে একটা সেবা দেওয়া হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এমন তাৎক্ষণিক কোনো কর্মসূচি সাধারণত নেই। আমরা কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক। আজকে রোহিঙ্গাদের যে ইস্যুটা এটা কিন্তু আসলে ফরমাল। কারণ, তারা মানুষ, সেটা আমরা বিবেচনা করব, কিন্তু মানুষ হিসাবে তাদের একটা পরিচয় আছে, তারা বার্মিজ বা মিয়ানমারের নাগরিক। তুমি ইচ্ছা করলেই যেমন বিয়ে করতে পার না, তেমনি তুমি ইচ্ছা করলেই কিন্তু সমাজসেবামূলক কাজ করতে পারবে না সরকারের অনুমোদন ছাড়া। তোমাকে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। সুতরাং শীতার্ত মানুষের পাশে দাড়াঁনোর প্রয়োজন যেমন আছে, তা পূরণের পথও সুনির্দিস্ট।
পরিচিতি : অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন