চাল পিঁয়াজের দামের সাথে জীবন যাত্রার খরচ বৃদ্ধি
রাজেকুজ্জামান রতন
আমাদের দেশের সরকার দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, দেশে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ আছে। কি অদৃশ্য কারণে চাল গম আমদানি করা হয় এবং নানা কারণে বিশ্ববাজারের কথা বলে চাল ও গমের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমাদের যখন হাওড়ে বন্যা হল, আমরা সরকারকে বলেছিলাম বন্যার জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে। কিন্তু সরকার বলেছিলেন, বন্যায় তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। পরে দেখা গেল ৯ লাখ টন খাদ্যের ঘাটতি হয়েছে, কিন্তু আমাদের দেশে সামগ্রিক চাহিদার তুলনায় ৯ লাখ টন খাদ্যের অভাব তেমন কিছু নয়। তারপরে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন ৭০ হাজার টন চাউলের প্রয়োজন হয়। সেখানে যদি ৪০ হাজার টন চাল প্রতিদিন কেনাবেচা হয়।
আর কেজিপ্রতি ১৫ টাকা হারে বেশি দেওয়া হয়, এতে করে জনগণ থেকে প্রতিদিন ৬০ কোটি টাকা আদায় করা হয়। তাহলে মাসে ১৮০০ কোটি টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এর পর আমাদের দেশে প্রতিমাসে ৪০ হাজার টন পেঁয়াজ লাগে, কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ১৮-১৯ টন। তাহলে আমাদের দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি হওয়া কথা না। কিন্তু আমাদের সরকার বলেছিলেন আমাদের ৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা আছে। যদি ৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমাদনি করা থাকে তাহলে তো পেঁয়াজের ঘাটতি থাকার কথা নয়। আর দাম কমার কথা। কিন্তু আমরা দেখছি দাম না কমে, ৪০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৮০-১২০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। তাহলে হিসেব মতে ১ মাসে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। কখনো চালের দাম বাড়িয়ে, কখনো পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে, কখনো চিনির দাম বাড়িয়ে সাধারণ জনগণেকে যে আঘাতটি কার হয় তা খুবই কষ্ট সাধ্য। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রধান আঘাতটি সহ্য করে আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষ। যারা আমাদের দেশে উন্নয়নের জন্য চাকা ঘোরায় তাদের উপর এ আঘাতটা বেশি আসে।
পরিচিতি : কলামিস্ট ও কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, বাসদ
মতামত গ্রহণ : রাশিদুল ইসলাম মাহিন
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ