মানবতাবিরোধী অপরাধ : পুঠিয়ার ফিরোজ খাঁর তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত
জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : রাজশাহীর পুঠিয়ার মো. আব্দুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁর বিরুদ্ধে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গতকাল রোববার ধানম-িতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান।
আসামির বিরুদ্ধে চার সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন ছাড়াও অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতারিরোধী ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি তদন্ত সংস্থার ৫৮তম তদন্ত প্রতিবেদন।
পুঠিয়ার ভালুকগাছি ইউনিয়নের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলামের (মৃত) নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর হয়ে এ আসামি পুঠিয়া ও দুর্গাপুর এলাকায় এসব অপরাধ সংঘটিত করেন।
তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হান্নান খান বলেন, পুঠিয়ার বাঁশবাড়ী এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মো. আব্দুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁ মুক্তিযুদ্ধের আগে মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে শান্তি কমিটির স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হন। তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে আসামি ফিরোজ খাঁর বিরুদ্ধে চারজন সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮ থেকে ১০টি বাড়িঘর লুণ্ঠনসহ ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে দেওয়ার ঘটনায় পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে পুঠিয়া থানার ভালুকগাছী ইউনিয়নের সাঁওতাল পাড়ায় গিয়ে আসামি ফিরোজ খাঁ, পাকিস্তানি আর্মি ও তাদের সহযোগীরা স্বাধীনতার পক্ষের লাড়ে হেমব্রম, কানু হাসদা, জটু সরেন ও টুনু মাড্ডিকে তরবারি দিয়ে কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
হান্নান খান জানান, এ আসামি ‘খুবই ধূর্ত’। একাত্তরে নাশকতার এক মামলায় গ্রেফতার হলে ফিরোজ খাঁকে পরে গত বছরের ২৪ জানুয়ারি যুদ্ধাপরাধের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তার পূর্বপুরুষ ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে আসা। মুক্তিযুদ্ধের পর সে পালিয়ে গিয়েছিল।
সম্পাদনা : আনিস রহমান