উম্মুল ওয়ারা সুইটি : ক্ষমসতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ঢাকা উত্তরের সিটি কর্পোরেশনের উপনির্বাচনে নিজেদের মেয়র প্রার্থী বাছাই প্রায় সম্পন্ন করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে দলের সবুজ সংকেত পেয়ে প্রচার প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ও কমছে না বরং বাড়ছে। এই সংশয় সহসা দূর হবে না বলে মন্তব্য করে বিশ্লেকরা বলছেন, আইনের মারপ্যাঁচ মামলার জালে আটকে যাবে এই নির্বাচন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকÑসুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বড় জটিলতা হচ্ছে নতুন কাউন্সিলরদের মেয়াদ। কমিশন বলেছে, বর্তমান পরিষদের মেয়াদের সঙ্গে নতুন কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু আইনে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। তাই কেউ মামলা করে নির্বাচন ভন্ডুল করার সুযোগ নিতে পারেন। তিনি বলেন, ইসির উচিত সরকারকে এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলা। আর সরকারের এ বিষয়ে কিছু দায়িত্ব রয়েছে, তা হলেও আইন সংশোধন করে দিয়ে মেয়াদ স্পষ্ট করা।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ডিএনসিসি মেয়র পদে উপনির্বাচন ও উত্তর-দক্ষিণের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ৩৬ ওয়ার্ডেও ভোট নিয়ে নানামুখী শঙ্কা রয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ঘোষণা হবে। ওই তালিকায় স্থান পাওয়া নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডের সব ভোটার মেয়র পদে ভোট দিতে পারবেন না। আবার তাদের অনেকেই প্রার্থী হতে পারবেন না। তিনি বলেন, ১৮ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটিতে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। এতে নতুন ভোটারদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হতে পারেন। মামলাও করতে পারেন। কারণ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে প্রার্থী এবং সমর্থক ও প্রস্তাবকের ভোটার নম্বর প্রয়োজন। ২০১২ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ওয়ার্ডে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা আরো বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। যার ফলে তাদেও ভোট আটকে যাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা আইনী জটিলতার আশংকার উল্লেখ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, সিটি করপোরেশনের আইন সংশোধন করে নতুন ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মেয়াদকাল নির্ধারণ না করলে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
জানা গেছে, উত্তরের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন অন্তর্ভুক্ত ৩৬টি ওয়ার্ডে নির্বাচনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ অনুরোধ করেছে। কিন্তু তারা আইনি সমাধানের বিষয়ে তেমন কিছু বলেননি। এ ছাড়া উপনির্বাচন ও কাউন্সিলর পদে নতুন ভোটারদের ভোট দেয়ার অধিকার থাকলেও প্রার্থী হওয়ার অধিকার নেই। দুই সিটিতে সীমানা ও ওয়ার্ড বেড়ে যাওয়ায় পরিষদের বা বর্ধিতাংশের কাউন্সিলর পদেও মেয়াদ নিয়ে জটিলতার শঙ্কা রয়েছে।