শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও এমপিওভুক্তি পরবর্তী বাজেটে : সংসদে প্রধানমন্ত্রী অসাংবিধানিক শাসন বা জরুরি অবস্থা এলে তাদের গুরুত্ব বাড়ে
আসাদুজ্জামান স¤্রাট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও এমপিওভুক্তকরণ সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। আমরা নীতিমালার ভিত্তিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে যাচ্ছি, পরবর্তী বাজেট যখন আসবে তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল সরকারিকরণ ও এমপিওভুক্তি নীতিমালার ভিত্তিতেই হবে। কোন স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী কত, পাওয়ার যোগ্য কি না দেখতে হবে।
এক পর্যায়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে একজন এলো, মাননীয় স্পিকার আপনারই এলাকার বিষয়টি। এসময় স্পিকার হাস্যরসিকতায় বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার শ্বশুরবাড়ী। (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর সেই আসন ছেড়ে দিলে উপ-নির্বাচনী এমপি হন শিরীন শারমিন চৌধুরী।) প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে যে স্কুলের প্রস্তাব নিয়ে এলো সেই স্কুলে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী, মাত্র দেড়শ। সেখানে সরকারিকরণ করার প্রস্তাব নিয়ে আসছে আমারই আত্মীয়। আমি বলে দিলাম যেখানে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী, এটা কীভাবে সরকারিকরণ করব। একটা যৌক্তিকতা থাকতে হবে তো। আমার আত্মীয় হয়ে প্রস্তাব নিয়ে এলো আর আমি সেটা দেখেই সরকারি করে দেব এত বড় অন্যায় তো আমি করব না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা প্রায় ৩৬ হাজার স্কুল সরকারিকরণ করেছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠন করলো তখন আমরা ২৬ হাজার স্কুল সরকারি করে দিয়েছি। তখন কিন্ত একটা কথা ছিল আর কোনো স্কুল সরকারিকরণের জন্য দাবি করা যাবে না, এমপিওভুক্ত করলেই হবে। এরপর বেশ স্কুল এমপিওভুক্ত করে দিয়েছি। এরপর দেখলাম আবার শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করলেন। প্রত্যেক এলাকায় কোথায় কত স্কুল হবে, কয়টা স্কুল প্রয়োজন সেগুলো কিন্তু একটা হিসাব করে সেইভাবে স্কুল তৈরি করার নীতিমালা আমরা করে দিয়েছি। বন্যাপ্রবণ এলাকায় কিছু স্কুল তৈরি করার প্রকল্প নিয়েছি। প্রায় ৩ হাজার স্কুল করব। সেখানে স্কুল যেমন চলবে আবার বন্যা এলে সেখানে যেন মানুষ আশ্রয় নিতে পারে সেই ব্যবস্থা হবে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন এলেই দেশের একটি শ্রেণী আছে তারা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এদের মাথায় একটাই জিনিস থাকে যদি অস্বাভাবিক, অসাংবিধানিক, মার্শাল ল’ বা জরুরি অবস্থা কখন আসবে, তাদের গুরুত্ব পাবে। এই শ্রেণীর মানুষরা আঁকাবাঁকা বা অবৈধপথে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। তিনি আরো বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময়ও তারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। আর ২০১৩ সালেও বিএনপি নেত্রী নির্বাচন বানচাল করে আঁকা-বাঁকা পথে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন। তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এই শ্রেণীর মানুষরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য যন্ত্রণাদায়ক।
ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তাকে নিয়ে বিভিন্ন বিশেষণ সম্পর্কে বলেন, কী পেলাম বা কী পেলাম না তার হিসাব আমি করি না। কাজ করি দেশের মানুষের জন্য, এদেশের প্রয়োজনে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর কেন দেশের উন্নয়ন হয়নি? একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশের মানুষ উন্নয়নের ছোঁয়া পায়।