মিরপুরের শততম ম্যাচে হাথুরুর শ্রীলঙ্কা হারল জিম্বাবুয়ের কাছে
এল আর বাদল : মিরপুর স্টেডিয়ামের শততম ওয়ানডে ম্যাচটি জিতে নিলো জিম্বাবুয়ে। তারা কোচ হাথুরুসিংহের শ্রীলঙ্কাকে ১২ রানে হারিয়ে দেয়। ত্রিদেশীয় সিরিজে এই দুই দলের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করল বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট। ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজনে ‘সেঞ্চুরি’ করেছে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে ম্যাচের টস পর্বের মধ্য দিয়ে মূলত বিশ্বের ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ১০০ ওয়ানডের অভিজাত তালিকায় প্রবেশ করেছে এই স্টেডিয়াম।
এছাড়া, একদিক থেকে আগের ৫ ভেন্যুকে ছাড়িয়ে গেছে মিরপুর। সবচেয়ে কম সময়ে একশ ওডিআই ম্যাচ গড়ালো মাঠটিতে। সময় লেগেছে মাত্র ১১ বছর। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে এর পথচলা শুরু।
গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি সত্যিকার অর্থেই ছিল রোমাঞ্চে ঠাসা। আগে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কাকে ২৯১ রানের লক্ষ্য দেয় জিম্বাবুয়ে। শ্রীলঙ্কার ইনিংসে বারবার বদলালো ম্যাচের রং। একবার শ্রীলঙ্কার দিকে ম্যাচ হেলে যায় তো আরেকবার জিম্বাবুয়ের দিকে। শেষ পর্যন্ত জয় পেল আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে। ১.৫ ওভার বাকি থাকতেই শ্রীলঙ্কাকে ২৭৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১২ রানে জয় পায় তারা।
বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব ছেড়ে শ্রীলঙ্কার প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন হাথুরুসিংহে। নিজের নতুন দায়িত্বের শুরু হয়েছে হার দিয়ে। শ্রীলঙ্কাকে বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন হাথুরুসিংহে। গত বছরের জুন-জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে নিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।
নতুন বছরে নতুন কোচের অধীনে সেই জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেই শুরু করল শ্রীলঙ্কা।
সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৭০ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু সেই জিম্বাবুয়ে ঘুরে দাঁড়ালো লঙ্কার বিরুদ্ধে। তারা শ্রীলঙ্কাকে ২৯১ রানের বিরাট চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে হ্যামিলটন মাসাকাদজার ৭৩ ও সিকান্দার রাজার অপরাজিত ৮১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে সুরঙ্গা লাকমল ১টি, থিসারা পেরেরা ২টি ও আসেলা গুনারতেœ ৩টি করে উইকেট নেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৭৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন হ্যামিলটন মাসাকাদজা ও সলোমন মিরে। ইনিংসের ১৩তম ওভারে থিসারা পেরেরার বলে কুসল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন সলোমন মিরে। ব্যক্তিগত ৩৪ রান করে ফিরে যান তিনি। ১৭তম ওভারে সুরঙ্গা লাকমলের বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের হাতে ধরা পড়েন ক্রেইগ আরভিন। দলীয় ১৪২ রানে হ্যামিলটন মাসাকাদজাকে ফেরান আসেলা গুনারতেœ। দলীয় ১৬৯ রানে ব্রেন্ডন টেইলরকে বোল্ড করেন থিসারা পেরেরা। ৪৪তম ওভারে আসেলা গুনারতেœর বলে উপুল থারাঙ্গার তালুবন্দি হন ম্যালকম ওয়ালার। শেষ ওভারে আসেলা গুনারতেœর বলে আকিলা ধনঞ্জয়া ক্যাচ নেন পিটার মুরের।
জবাবে জয়ের জন্য ২৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ঝড় তুলেছিলেন প্রথমসারির ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু জিম্বাবুইয়ান বোলারদের দাপটে খেই হারিয়ে ফেলে হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। কেবল কুশল পেরেরা (৮০), থিসারা পেরেরা (৬৪) ও অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউসের (৪২) ব্যাটিং তা-ব জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল জিম্বাবুয়েকে। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলেন না শেষ জুটি সুরঙ্গা লাকমাল আর দুসমনথো চামিরা। সুইপ শট খেলতে গিয়ে বল তুলে মারলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ ধরেন মাভুতা। ব্যাটে নান্দনিক ৮১ রানের পর বল হাতে ১ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হয়েছেন সিকান্দার রাজা। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন