উম্মুল ওয়ারা সুইটি : জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতি পদে পরিবর্তন হচ্ছে না। দ্বিতীয় মেয়াদে আবদুল হামিদকেই একই পদে রাখতে চাইছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি এবং ভোটের বছরের নানা হিসেব নিকেষের কথা বিবেচনায় নিচ্ছে দল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর ধরেই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নিয়ে দলে জল্পনা কল্পনা চলে আসছে। অনেকের নামও আলোচনায় এসেছে। এ নিয়ে দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। তবে বেশির ভাগ নেতাই মনে করেন, নির্বাচনের আগে এই পরিবর্তন না হলেই ভালো।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি পদে আরেক মেয়াদে থেকে যেতে আবদুল হামিদকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, দলের একটি ছোট অংশ রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের পক্ষে। তবে বেশিরভাগ নেতাই চান, আবদুল হামিদ দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি থাকুক। তার সঙ্গে সবারই সখ্যতা রয়েছে। তাছাড়া তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর খুবই আস্থাভাজন। বিভিন্ন ইস্যুতে পরামর্শ দেওয়ার মতো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। যেকোনো ধরণের পরিস্থিতি তিনি মোকাবেলা করতে পারবেন।
আরেকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল আন্দোলন করার কথা বলছে। সেই ক্ষেত্রে সংলাপের বিষয় আসতে পারে। আবদুল হামিদ শুধু আওয়ামী লীগেই নয় সব রাজনৈতিক দলের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য। তিনি আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা। আবার দলের প্রতি আনুগত্য থাকলেও তিনি এই পদটিকে দলীয়করণের ঊর্ধ্বে রাখতে পেরেছেন বলেই ধারণা করা হয়। আর বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে তার বিষয়ে তেমন কোনো সমালোচনা আসেনি এখন পর্যন্ত।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী একজনের দুই দফায় রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার যোগ্যতা আছে। তিনি আরো বলেন, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বা ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির আগ পর্যন্ত সে সময়ের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে বিরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা বিবেচনা করছে দল।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নিয়ম মেনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। তফসিল ঘোষণা হয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি সংসদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। তার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে ২৩ এপ্রিলে। সংসদে বর্তমানে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের ইচ্ছাতেই নির্বাচিত হবেন রাষ্ট্রপতি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না। একাধিক প্রার্থী থাকলে ভোট হবে।
এদিকে, আগামী রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আশরাফ, স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ বেশ কিছু নাম গণমাধ্যমে আসছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম