অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিশৃঙ্খলায় অস্বস্তিতে আওয়ামী লীগ
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও উপ-কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খলা এবং ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর বেপরোয়া আচরণে অস্বস্তিতে রয়েছে। বিরোধী শক্তি নয় নির্বাচনের আগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করাই চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন দলের শীর্ষ মহল।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য, তাদের বিরুদ্ধে সংঘাত ও চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার দলীয় সভানেত্রী ছাত্রলীগকে সতর্কও করেছেন। এই সতর্কতার পর ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমে এসেছিল বলেও দলের শীর্ষ একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন।
তবে মঙ্গলবার ঢাবিতে ছাত্রীদের গায়ে হাত তোলাসহ ছাত্রলীগের বেপরোযা কর্মকা-ে আবারও কিছুটা বিব্রত শীর্ষ নেতৃত্ব। কৌশলে এই ঘটনায় ছাত্রলীগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ নেতাকর্মীরা। কিন্তু ছাত্রীদের মারধরের বিষয়টি দল ভালোভাবে নেয়নি। নির্বাচনের আগে এসব ঘটনায় না জড়াতে দল থেকে নির্দেশ দিয়েছে ছাত্রলীগকে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা ঢাবির ঘটনায় ওবায়দুল কাদেরসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতাকে বলেছেন, আগ বাড়িয়ে ছাত্রলীগ যেন কোনো অঘটনের মধ্যে না জড়ায়। এখন থেকে যেখানে যেই দলীয় বিশৃঙ্খলা করবে, তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, দলের ভেতরে অনেক অনুপ্রবেশকারী। এরা গত ১০ বছরে দলে ঢুকে কোন্দল বাড়াচ্ছে। আবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অনেকেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেরিয়ে এসেছেন। আর যারা নির্বাচন করেছেন, বড় রাজনৈতিক দল না থাকায় তারাও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংযুক্ত হননি। নিজেদের লোকজনকে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হয়েছেন নব্যদের দাপটে। ফলে সবাই অপেক্ষা করে আছে।
দলের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, উপ-সম্পাদক নিয়োগে বিএনপি-জামায়াতের লোকদেরও রাখা হয়েছে। হুট করে কারা কোত্থেকে এসে পদ পেয়ে যাবে, এটা তো হতে পারে না। শেখ হাসিনা বলেছেন, যাদের পদ দেওয়া হবে তাদের সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতাদের স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কারো ব্যক্তিগত সুবিধা বা পছন্দের লোককে উপ-সম্পাদক করা যাবে না।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তিনি এই নিয়োগের বিষয়ে কিছু জানেন না। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সম্পর্কে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই বিরোধ তো থাকবেই। তৃণমূলে সৃষ্ট কোন্দল সমাধানে কেন্দ্রীয় নেতারা সফরে বের হচ্ছেন বলে তিনি জানান। নির্বাচনের আগে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর যারা দলের শৃঙ্খলা মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর হওয়ার নির্দেশ দলীয় সভানেত্রীর। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম