খালেদার রায় ঘিরে সতর্ক বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
শাহানুজ্জামান টিটু ও মাঈন উদ্দিন আরিফ : জিয়া অরফানেজ দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে বিএনপির মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। বিএনপির শীর্ষনেতা ও আইনজীবীরা এই মামলার রায়ে খালেদা জিয়া খালাস পাবেন এমনটা আশা করেন। কিন্তু তারপরও এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে দলটির নীতিনির্ধারকরা দফায় দফায় বৈঠক করছেন রায় পরবর্তী দলের কর্মকৌশল নির্ধারণে। আজ থেকে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক পর্যায়ের নেতাদেরকে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য জেলা সফরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতাদের বৈঠকে করেছেন খালেদা জিয়া। ওই বৈঠকে নেতাকর্মীদেরকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে দলের প্রতিটি ইউনিট ও সাংগঠনিক জেলাগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে রায় পরবর্তী কী ধরনের কর্মসূচি নেয়া হবে এসব বিষয়ে তাদের মতামত নেওয়া হবে। এছাড়া বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন খালেদা জিয়া। এ সপ্তাহের কোনো একদিন এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের মাধ্যমে দলের কর্ম কৌশল নির্ধারণে নেতাদের মতামত ও সিদ্ধান্ত জানবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দলটির নীতিনির্ধারণী একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেন, বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মামলার রায় নিয়ে এ সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা হতে পারে। তাদের মতামত জানবেন ম্যাডাম। সবার মতামত নিয়ে কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
নীতিনির্ধারণী ফোরামের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে গতকাল থেকেই দলের বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজও তা অব্যাহত থাকবে। রাজধানীতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করবেন মহাসচিব।
দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করলে আন্দোলনে যাবে বিএনপি। তার জন্য সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে প্রস্তুত রাখার জন্য দলের সাংগঠনিক এবং সহ-সাংগঠনিক নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংগঠনিক নেতাদের নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে এ আহবান জানান তিনি। বৈঠকে থাকা একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাসচিব বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখার জন্য সাজা দিতে পারে। সেই জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে যে কর্মসূচি দেওয়া হবে তা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন করতে সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রস্তুত থাকার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, এবার আন্দোলনের কৌশল হবে ভিন্ন। জনসম্পৃক্ততা মূলক কর্মসূচি দেবে। তার জন্য যেসব জেলায় এখনো কমিটি হয়নি, এসব জেলাসহ-সকল জেলা মহানগরে দলীয় গ্রুপিং বাদ দিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য বলেছেন বিএনপি মহাসচিব।
দলের একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত আমাদেরকে জানানো হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা মত তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যাতে কেউ বিভ্রান্ত না হন। এসব নেতারা জানান, দলের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার ওপর জার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে নেতাকর্মীদের। সম্পাদনা : আনিস রহমান