কড়া হুঁশিয়ারির মধ্যেও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা বাতিল : শিক্ষামন্ত্রী
তরিকুল ইসলাম সুমন : সরকারের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী, কড়া হুঁশিয়ারির মধ্যেও বরাবরের মতো ফেসবুকে এসএসসির পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্র প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে প্রচারণা এবং সকালে ৮টা ৫০ মিনিট থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত একাধিক ফেসবুক ও মেসেঞ্জার গ্রুপে উত্তরসহ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন আপলোড হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ফেসবুকে আসা প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
সকালে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে পাওয়া প্রশ্নের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে ফেসবুকে ছড়ানো প্রশ্নের মিল নেই। আমি মিলিয়ে দেখেছি। বিষয়টি মিথ্যা ও গুজব। তবে যে ব্যক্তি এই প্রশ্নটি পোস্ট করেছেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা এরইমধ্যে এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সকাল সাড়ে ৯টায় ধানম-ি গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে প্রমাণ হলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা বাতিল করে নতুন পরীক্ষা নেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা তো জানেন, ২০ লাখ ছেলে-মেয়ের আবারও পরীক্ষা নেওয়া কী হয়রানি! প্রশ্নফাঁস যদি পরেও প্রমাণ হয়, তাহলেও পরীক্ষা বাতিল করে দেব। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের পরীক্ষা আমরা গ্রহণ করবো না।
গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র খুলে পরীক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষাগুলো নিরাপদে, শান্তিপূর্ণভাবে, নকলমুক্তভাবে এবং প্রশ্নফাঁস না হয়ে হতে পারে, এ জন্য আমাদের দিক থেকে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, আমি দুটো শব্দ ব্যবহার করেছি। আমরা খুবই ডেসপারেট, খুবই অ্যাগ্রেসিভ এ বিষয়ে। যদি কোথাও কেউ কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করে তাহলে তাকে কোনোভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না। কী হবে, আমিও সেটা ধারণা করতে পারি না। চরম একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের উদ্দেশে নাহিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা দেশ পরিচালনা করবে ভবিষ্যতে, তাদেরকে এমন একটি অনৈতিক কাজের মধ্যে জড়িয়ে ফেলা দুঃখজনক হবে। যারাই হোক, কেউ অপরাধী হলে, সেও যেন এ কাজ থেকে বিরত থাকে। অনেক জায়গা আছে সেখানে করুন, এখানে অন্তত করবেন না। কারণ এখানে শিক্ষার্থীর সুদূরপ্রসারী জীবনের ভবিষ্যত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা সূত্রে জানায়, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ফাঁস প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা বাতিলের কোনো উদ্যোগ নেবে না সরকার। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী