আজ শপথ প্রধান বিচারপতি হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন
জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না ও এস এম নূর মোহাম্মদ : দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। গতকাল শুক্রবার তার নিয়োগের আদেশে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেছেন, শনিবার(আজ) সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন প্রধান বিচারপতিকে শপথ পড়াবেন।
যদিও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নামও নিয়োগের ক্ষেত্রে আলোচনায় ছিল। তবে বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের পরই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। গতকাল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো.জহিরুল হক সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫(১) অনুচে¦ছদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন। শপথের তারিখ থেকে এ নিয়োগ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বিএসসি ডিগ্রি নেওয়ার পর এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে ১৯৮১ সালে আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি। তার দুই বছর পর ওকালতি শুরু করেন হাইকোর্টে। ১৯৯৯ সালে নিয়োগ পান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি নিয়োগ পান অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে। দুই বছর পর ২০০৩ সালে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
আপিল বিভাগে এখন যে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন, তার মধ্যে আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা জ্যেষ্ঠতম। তার পরেই রয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বয়সসীমা অনুযায়ী বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়ার দায়িত্বপালনের সময়সীমা এ বছরের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। আর বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সময়সীমা ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন বিচারপতি ইমান আলী। আর বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাবেন ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার অবসরে যাবেন ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।
গত বছরের ১ আগস্ট উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিয়ে করা ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় প্রকাশিত হয়। এই রায়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহ্’ার দেওয়া বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা। এমনকি সরকারপন্থী আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচিও পালন করেন সুপ্রিম কোর্টে। সমালোচনার মধ্যেই ১ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা হঠাৎ করেই স্বাস্থ্যগত কারণে এক মাসের ছুটির কথা জানিয়ে চিঠি দেন। ছুটিতে যাওয়ার পরে গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের পরে প্রধান বিচারপতির পদটি শূন্য ছিল।
আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিয়া গত বছরের ৩ অক্টোবর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি