লুসি হল্টের সহায়তায় এগিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী
তরিকুল ইসলাম : ব্রিটিশ নারী লুসি হল্টের সহায়তায় এগিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার বরিশাল সফরকালে ১৫ বছরের মাল্টিপল বাংলাদেশী ভিসাসহ লুসি হেলেনের হাতে তার পাসপোর্ট তুলে দেন শেখ হাসিনা। ৫৭ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছেন ব্রিটিশ এই নারী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও রয়েছে তার অসামান্য অবদান। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভার আগে লুসি হল্টের হাতে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসাসহ তার পাসপোর্টটি তুলে দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার সঙ্গে কথা বলেন। লুসি হল্ট বর্তমানে বরিশাল শহরে অক্সফোর্ড মিশনে কর্মরত রয়েছেন।
জন হোল্ট ও ফ্রান্সিস হোল্টের কণ্যা লুসি ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হেলেন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করে তিনি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশ সফর করেন। সে বছর তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে যোগ দেন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের শিক্ষা দেন। এরপর তিনি আর স্বদেশে ফিরে যাননি। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার টানে এখানেই থেকে যান।
২০০৪ সালে অবসর নেয়ার পর তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে ফিরে আসেন। অবসর জীবনে তিনি ইংরেজি শিক্ষা দেন এবং দুস্থ শিশুদের মানসিক প্রণোদনা দেন। পাশাপাশি দুস্থ শিশুদের জন্য সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আহত মানুষের সেবা-সশ্রুষা করেছেন। সে সময় তিনি যশোর ক্যাথলিক চার্চে কর্মরত ছিলেন। তিনি শিশুদের ইংরেজি শিক্ষা দিতেন। যুদ্ধ শুরু হলে লুসি ছাড়া অন্য সবাই স্কুল বন্ধ করে দিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে খুলনা চলে যায়। ভয়ঙ্কর ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি পাশের ফাতেমা হাসপাতালে যান এবং যুদ্ধাহত বেসামরিক নাগরিকদের সেবা করেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লুসিকে সম্মাননা প্রদান করে। লুসির শেষ ইচ্ছা, তিনি বাংলাদেশের মাটিতেই সমাহিত হবেন এবং মৃত্যুর পূর্বে তিনি এ দেশের নাগরিকত্ব হিসেবেই নিজেকে দেখতে চান। সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত