শিক্ষার্থীদের স্কুল লাইব্রেরীতে গমন নিশ্চিতে নির্দেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
তরিকুল ইসলাম সুমন : চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরি ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করা হলে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সম্প্রতি এ আদেশ জারি করেছে। আদেশে, ২০১৮ শিক্ষা বছরের শুরু থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি রুটিনে লাইব্রেরী ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। আদেশে আরও বলা হয়েছে, লাইব্রেরী ঘণ্টায় শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরীতে গমন ও পৃথক লাইব্রেরী কক্ষ না থাকলে শ্রেণিকক্ষেই বই আদান-প্রদান ও বিতর্ক, গল্প বলা, আবৃত্তি, দেয়াল পত্রিকা প্রস্তুত, বই পড়া নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইব্রেরী ঘণ্টার কার্যক্রম নিবিড় পরিদর্শনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে জেলা শিক্ষা ও উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. মো. আবদুল মান্নান এই প্রতিবেদককে বলেন, লাইব্রেরী ঘণ্টা রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তারপরেও যদি কোনও প্রতিষ্ঠান তা না করে, তাহলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও সাধারণ জ্ঞান অর্জনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয় শ্রেণিকক্ষে সাধারণ বিষয় যেমন পড়ানো হয়, তেমনি করে লাইব্রেরীতে পড়াশুনা করার জন্য ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরী ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বইয়ের বাইরে অন্যান্য বই পড়বে, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও আবৃত্তিতে অংশ নেবে, দেয়াল পত্রিকা বানানো শিখবে এবং বইপড়া নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সভায় ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরী ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লাইব্রেরী ঘণ্টা রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে তা বাস্তবায়ন করার কথাও বলা হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরের বছর ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে তা রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দেয় মাউশি। তবে সরকারের সরবরাহ করা রুটিনে লাইব্রেরী ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এ নির্দেশনা মানতে পারেনি। তবে নিজেদের মতো করে সাধারণ লাইব্রেরী কার্যক্রম চালু রাখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
২০১৭ সালে মাউশি ওই নির্দেশনা দিলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরী ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত না করায় অভিযোগ ওঠে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এ কারণে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ নির্দেশনাটি কার্যকর করার জন্য আবার নতুন করে আদেশ জারি করে। সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত