প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে ৮৩২০ রোহিঙ্গার তালিকা দিল বাংলাদেশ
আনিসুর রহমান তপন : কক্সবাজারে আশ্রিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় আট হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার একটি তালিকা সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিয়াও সোয়ের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের হাতে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ।
গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ তালিকা দেওয়া হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে বিকেল ৩টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় সন্ধ্যায়। বৈঠকটি আন্তরিকতাপূর্ণ ও সফল হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, দুদেশের সীমান্তের মাঝামাঝি জায়গায় (নো ম্যানস ল্যান্ডে) ৬ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছেন। এদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি একটি বৈঠক হবে। এরইমধ্যে যারা আশ্রয় নিতে এসেছে, তাদের মধ্যে আট হাজার আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের হাতে দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে এদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার। তবে তার আগে তালিকাটি যাচাই করবে তারা।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের গঠিত কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয় দুদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠকে। এছাড়া, বাংলাদেশের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রেক্ষিতে মিয়ানমার প্রতিনিধিরা তাদের সীমান্তে থাকা ইয়াবার ৪৯টি কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের নেতৃত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আর মিয়ানমার প্রতিনিধি দলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিয়াও সোয়ের নেতৃত্বে ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। গত আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হলে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখো রোহিঙ্গা, যা এখন পর্যন্ত ৭ লাখের বেশি। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব মতে, সবমিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত