মুহাম্মাদ আবু আখতার
আমাদের সমাজে ব্যভিচার ও ধর্ষণ ক্রমবর্ধমানহারে বেড়েই চলছে। পত্রিকার পাতা উল্টালেই প্রতিনিয়ত এর অসংখ্য দৃষ্টান্ত চোখে পড়ে। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার। জিনা-ব্যভিচার ও ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামের দিকনির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যভিচার অত্যন্ত জঘন্য পাপ। তাই আল্লাহ তায়ালা এর ধারেকাছে যেতেও নিষেধ করেছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর ব্যভিচারের ধারে-কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা আল-ইসরা: ৩২)
আল্লাহ তায়ালা ব্যভিচার নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন হুকুম-আহকামের মাধ্যমে এ পাপ সংঘটিত হওয়ার সকল পথ বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছেন। ব্যভিচারের প্রথম ধাপ হচ্ছে চোখের জিনা বা কুদৃষ্টি। তাই মহান আল্লাহ তায়ালা গায়রে মাহরাম নর-নারীর পরস্পরের প্রতি কুদৃষ্টির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞারোপ করেন। আল্লাহ তায়ালা পুরুষদের ব্যাপারে বলেন, ‘মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা নুর: ৩?)
নারীদের প্রতি পুরুষের কুদৃষ্টি দেয়া যেমন নিষিদ্ধ তেমনি পুরুষদের প্রতিও নারীদের কুদৃষ্টি দেয়া নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।’ (সুরা নুর: ৩১) নারীদের সুসজ্জিত হয়ে বেপর্দায় চলাফেরা জেনা ব্যভিচারের পথ প্রশস্থ করে দেয়। তাই আল্লাহ তায়ালা নারীদের পর্দা পালনের নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেন, হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের (জিলবাব হচ্ছে বোরকা জাতীয় পোশাক যা দ্বারা সমগ্র শরীর ঢেকে রাখা যায়) কিছু অংশ নিজেদের (মুখমন্ডলের) উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা আহযাব: ৫৯)
এছাড়া নারীদের সুমিষ্ট কণ্ঠ শুনে পুরুষরা জিনা-ব্যভিচারের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। তাই নারীদের কোমল ও আকর্ষণীয় কণ্ঠে কথা বলতে নিষেধাজ্ঞারোপ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করবে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা প্রয়োজনীয় ন্যায়সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।’ (সুরা আহযাব: ৩২)
ইসলামের এসব দিকনির্দেশনা অনুসরণের মাধ্যমে জিনা-ব্যভিচার ও ধর্ষণ সমাজ থেকে সম্পুর্ণরূপে দূরীভূত করা সম্ভব। এ ছাড়া অন্য কোনভাবে এ জঘন্য পাপ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।